নিজস্ব প্রতিনিধি : কলারোয়া উপজেলাজুড়ে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে কাঁঠালের। বসতবাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে ফসলী জমির দু’ধারেসহ বিভিন্ন জমিতে জাতীয় ফল কাঁঠালের ফলন চোখে পড়ার মতো। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কাঠাল গাছে ব্যাপকহারে কাঁঠালের ফলন লক্ষণীয়। দেয়াড়া এলাকার কৃষক মোস্তফা কামালসহ অন্যরা জানান- কিছু কাঠাল পাকা শুরু করেছে, তবে পুরোপুরি পাকতে আরো মাসখানিক সময় লাগতে পারে।’ তারা জানান- ‘আকৃতিভেদে প্রতিটি কাঁঠাল খুচরা ও পাইকারি মূল্য আনুমানিক ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে মগডাল পর্যন্ত থোকা থোকা ধরে থাকা কাঁঠালগুলোই বলে দেয় ফলনের জন্য উপযোগি এলাকার মাটি। এই মৌসুমে কলারোয়ার অনেক পরিবার পরিবার কাঁঠাল বেচা-কেনা করে আয় করে থাকেন। তাছাড়া আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে কাঁঠাল পাকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে এবার জ্যৈষ্ঠ মাসেও পর্যাপ্ত কাঁঠাল বাজারে বেচা কেনা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- কাঁঠাল রসালো ও সুস্বাদু একটি ফল। সার-রাসয়নিক প্রয়োগ ছাড়াই এবং যতœ ছাড়াই এ গাছ বেড়ে ওঠে। কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল যা প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীদের মতে- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে রয়েছে ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ০.৩০ গ্রাম ফ্যাট, ২.৬১ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.০৭ গ্রাম লৌহ, ০.১১ ভিটামিন বি-১, ০.১৫ গ্রাম ভিটামিন বি-২ এবং ২১.০৪ গ্রাম ভিটামিন ই। সুতরাং প্রতিটি মানুষের সুস্থ-সবল স্বাস্থ্যের জন্য ও ভিটামিনের অভাব পূরণে সুস্বাদু কাঁঠাল খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যদিও পুষ্টি ও ভিটামিনের দিক থেকে হজমে একটু সমস্যা হয় বলে সকল শ্রেণীর ভোক্তারা জানান। জানা গেছে- কাঁঠালের একটি বড় গুণ হলো এর কিছুই বাদ যায় না। কাঁঠালের রস থেকে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। কাঁঠালের বিচি এবং কাঁচা কাঁঠালের মোচা দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া যায়। কাঁঠালের খোলস ও পাতা গরু-ছাগলের প্রিয় খাবার। এ ছাড়া কাঁঠালের কাঠ থেকে আসবাবপত্র তৈরি করা ভালো হয়। ‘কাঠালের বাম্পার ফলনের পরও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় চাষীরা কাঁঠালের ভালো দাম পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। কাঁঠালসহ মৌসুমী ফল সংরক্ষণ এবং সুষ্ঠু বাজারজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী এ খাতে সংশ্লিষ্টদের কাছে এমনটাই প্রত্যাশা করেন কাঁঠাল উৎপাদনকারীরা। কলারোয়া উপজেলার কৃষি অফিসার মহাসীন আলী জানান- ‘কলারোয়া উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষাবাদ হয়েছে। কাঁঠালের তেমন কোন রোগ বালাই হয় না তবুও আগামী বছর থেকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা ও যথাযথ পরামর্শ দেয়া হবে।’