আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল মাওবাদীরা। এমনই দাবি করেছে দেশটির পুলিশ। পুনে পুলিশ জানিয়েছে, রাজীব গান্ধীর মত মোদিকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল মাওবাদীদের!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর ভিমা কোরেগাঁওয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজন ‘মাওবাদী’কে আটক করেছিল পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই পাঁচজনকে পুনে আদালতে তোলা হয়।
ওই সময় পুলিশ জানায়, আটক হওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজনের বাড়ি থেকে এই চিঠি পাওয়া যায়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ভারতের মুম্বাই, নাগপুর ও দিল্লি থেকে যথাক্রমে সুরেন্দ্র গাড়লিং, সুধীর ধাওয়াল, মহেশ রাউত, সোমা সেন এবং রোনা উইনসন নামে পাঁচ মাওবাদীকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য হাতে উঠে এসেছে পুলিশের।
পুলিশ সূত্র জানায়, মাওবাদীদের অভ্যন্তরীণ কয়েকটি কথোপকথন পেয়েছে পুলিশ। ওই কথাবার্তা থেকেই জানা যায়, রাজীবের মতই মোদিকে হত্যার ছক কষছে মাওবাদীরা।
১৯৯১ সালের ২১ মে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন রাজীব গান্ধী।
মাওবাদীদের ভিমা কোরেগাঁওয়ের আন্দোলনকারী রোনা উইনসনের দিল্লির বাড়ির ল্যাপটপ থেকে একটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে। ওই চিঠিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খুন করার কথা লেখা আছে।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মোদিকে খুন করার ‘অপারেশনে’র জন্য আট কোটি রুপি, এম-৪ রাইফেল এবং চার লাখ গুলির প্রয়োজন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে যেভাবে খুন করা হয়েছিল হুবহু সেই ছকেই মোদিকে খুন করার কথাই লেখা আছে ওই চিঠিতে।
চিঠিতে আরও লেখা আছে, ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণের এটাই উপযুক্ত সময়। পার্টি যদি আমাদের প্রস্তাবে রাজি হয়, তাহলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রোড শো কর্মসূচিকেই কাজে লাগাতে হবে।’
চিঠিতে বলা হয়, ‘মোদি ভারতে হিন্দু ফ্যাসিস্ট সরকার চালাচ্ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে বিজেপির পরাজয় ঘটলেও ইতিমধ্যেই ১৫টি রাজ্যে বিজেপি সরকার কায়েম করেছে। তাই আমরা ভাবছি, ভারতের মাটিতে আর একটা রাজীব গান্ধীর মতো খুনের ঘটনা ঘটানো হোক।’
ওই চিঠি প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার পুনে পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার রবীন্দ্র কদম জানান, তদন্ত চলাকালীন পুলিশ পেন ড্রাইভ, হার্ড ডিক্স এবং অন্যান্য নথি উদ্ধার করেছে। সেগুলো এরই মধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম বলেন, ‘এই চিঠি যে একেবারেই মিথ্যা সে কথা বলছি না, তবে এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পুরনো চাল হতে পারে। যখনই মোদির জনপ্রিয়তা তলানিতে গেছে, তখনই এমন হত্যার গল্প তৈরি করা হয়।’
ভারতের সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানান, ‘ওই চিঠির পেছনে কী সত্যতা রয়েছে সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’