কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটা উপজেলার শীভনগরে অবস্থিত ইছামতি নদীর কুল ষেষে গড়ে উঠা “রুপসী ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট” পিকনিক স্পটে শনিবার বিকালে পরিদর্শনে আসেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। এই রুপসী ম্যানগ্রোভ পিকনিট স্পটটি সরকারী পৃষ্টপোতকতায় ও সাহায্যে হতে চলেছে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন শিল্প। ভারত-বাংলাদেশ বিভাজনকারী ইছামতি নদীর কুল ঘেষে দেবহাটা উপজেলার শীবনগর গ্রামে গত প্রায় ৫ বছর আগে মানুষের চিত্ত বিনোদনের লক্ষ্যে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হয় “রুপসী ম্যানেগ্রাভ দেবহাটা ফরেস্ট” নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই “রুপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট” উদ্বোধন করেন। এখানে সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এনে সেসময় রোপন করা হয়, খনন করা হয় একটি দিঘী, তৈরী করা হয় একটি রেস্ট হাউজ। গত ২ বছর আগে এখানে আসেন প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার। তিনি জায়গাটিতে এসে মুগ্ধ হন এবং উন্নয়নের সবধরনের আশ^াস প্রদান করেন। গত কয়েক মাস আগে থেকে বর্তমান দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদের উদ্যোগে ও নির্দেশনায় এই বিনোদন কেন্দ্রটিকে আরো নান্দনিক ও নয়নাভিরাম করে একটি সৌন্দর্যপূর্ণভাবে মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য গড়ে তুলতে ট্রেইল নির্মাণ, দিঘীতে প্যাডেল বোর্ড দেয়া, পাকা বেঞ্চ নির্মাণ, বিভিন্ন কৃত্রিম পশু পাখি স্থাপন, গাড়ি গ্যারেজ, উপজেলা সদর থেকে রুপসী ম্যানগ্রোভ পর্যন্ত পিচের রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ শুরু করা হয়। সেসব কাজের অনেকটাই শেষ হয়ে বর্তমানে এই চিত্ত বিনোদন কেন্দ্রটি এখন নান্দনিক রুপ ধারন করেছে। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ জানান, রুপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি দেবহাটা উপজেলার শিবনগর মৌজার ১ নং খতিয়ানের ৩৯৮ নং দাগের ইছামতি নদীর তীরে জেগে ওঠা চরভূমি। যার আয়তন ৩১.৪৬ একর (০৭ একর পুকুরসহ)। দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ বন সাতক্ষীরা জেলার বর্তমানে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি ও নানা ফলদবৃক্ষ। দুরদুরন্ত থেকে দেশী ও বিদেশী পর্যটকরা এসে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর সৌন্দর্য এবং রুপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ বনের অপরুপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন। ইউএনও আরো বলেন, এখানে সাধারনত প্রতিদিন ৫০০-৬০০ জন এবং শুক্র ও শনিবার ১০০০ জন পর্যটক আসছেন। গত ঈদুল ফিতরের দিন থেকে এই পিকনিট স্পটে টিকিট সিস্টেম করে প্রায় ১ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে বলে ইউএনও জানান। শনিবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন সাতক্ষীরায় যোগদানের পরে প্রথম এখানে এসে বিনোদন কেন্দ্রটির অপরুপ প্রাকৃতিক রুপ দেখে মুদ্ধ হন। তিনি হেঁটে হেঁটে বিনোদন কেন্দ্রটির সকল জায়গা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি রুপসী ম্যানগ্রোটিকে আরো সৌন্দর্যপূর্ন করতে কাজ করবেন বলে জানান। এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ, দেবহাটা থানার ওসি কাজী কামাল হোসেন, সাতক্ষীরার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের মধ্যে আমিনুর রহমান, আবু তালেব, আক্তার হোসেন, শািম্ম আক্তার, জেলা পরিষদ সদস্য আল ফেরদাউস আলফা, দেবহাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইন, দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী, পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, দেবহাটার টাউনশ্রীপুর বিজিবির সুবেদার শাহাব উদ্দীন, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব আর.কে.বাপ্পা, সাংবাদিক কে.এম রেজাউল করিম সহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।