আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বর্মি সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-গণহত্যার প্রমাণ

By Daily Satkhira

June 24, 2018

বিদেশের খবর: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নারীদের গাছের সাথে বেঁধে দিনের পর দিন দলবদ্ধ ধর্ষণ আর পুরুষদের দলে দলে জীবিত অবস্থায় গণকবরে ফেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মতো ভয়াবহ সব নৃশংস কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।

এবার সেসব অপরাধের বেশকিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ পাঠানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কাছে।

বাংলাদেশের কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার জোট এই তথ্যগুলো পাঠিয়েছে। নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের পালাতে বাধ্য করার বিষয়টি তদন্তে চাপ দেয়ার কাজ করছে সংস্থাগুলো।

এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে হেগে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন আইসিসি বিচারপতিরা। সেখানেই এসব সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে প্রথমবারের মতো বিস্তারিত আলোচনা শুরু হয়।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান সেসব দলিলাদি দেখার সুযোগ পেয়েছে। মামলার তদন্তে এসব তথ্য-প্রমাণ ব্যবহৃত হবে।

আইসিসির তদন্তের জন্য আইনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনজীবী ফাতৌ বেনসৌদা। এর আগে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এমন কোনো মামলা বিবেচনায় আনা হয়নি আইসিসিতে। এর কারণ, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আদালতটির সদস্য রাষ্ট্র নয়। ফলে দেশটি আইসিসির কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়।

কিন্তু বেনসৌদা যুক্তি দেখিয়ে বলেন, মিয়ানমার সদস্য রাষ্ট্র না হলেও বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য। তাই বাংলাদেশের সীমান্তে যদি আরেকটি দেশ তাদের জনগোষ্ঠীকে জোর করে ঢুকতে বাধ্য করে, তবে সেটি অবশ্যই আইনগতভাবে আইসিসির বিচারের এখতিয়ারে পড়ে। বাংলাদেশে যদি কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটে, বা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো অন্যায্যতা ঘটে, তবে তার অনুসন্ধান এই আদালত করতেই পারেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নৃশংসভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার ঘটনা তদন্ত করার ক্ষমতা আইসিসির আছে। এভাবে এই আদালত মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার অধীনে আনতে পারেন বলে যুক্তি দেখান এই আইনজীবী।

ফাতৌ বেনসৌদার এই যুক্তি গ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এর প্রেক্ষিতে মিয়ানমারকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর খণ্ডন করার জন্য এবং প্রমাণ করার জন্য যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইসিসির হস্তক্ষেপের কোনো এখতিয়ার নেই। তবে মিয়ানমার সরকার এই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করবে না বলেই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। কেননা গত বুধবারই দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির কার্যালয়ের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, সু চি ‘দেশের বাইরে থেকে আসা ঘৃণাসূচক বক্তব্যকে’ তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন। কেননা এসব বক্তব্য রাখাইনের মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মধ্যে টানাপোড়েনকে উস্কানি দিচ্ছে।