নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মাঠে নামছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। আর বিশ্বকাপে টিকে থাকার শেষ সুযোগের এই ম্যাচে পুরো বিশ্বের সাথে জাতীয় দলের সতীর্থরাও মেসির জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় থাকবে।
গ্রুপ-ডি’র দুই রাউন্ড শেষে গতবারের রানার্স-আপ দলটি বিদায়ের একেবারে শেষ ক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। রাশিয়া বিশ্বকাপে অভিষিক্ত নবাগত আইসল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র ও তারকা সমৃদ্ধ ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে আর্জেন্টিনার সামনে এখন পরাজয়ের শঙ্কা।
টুর্নামেন্টের আগেই মেসিকে নিয়ে একটি আলোচনায় সড়ব ছিল পুরো ফুটবল বিশ্ব। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ কি মেসির জন্য সৌভাগ্যের বার্তা বয়ে আনবে কিনা। ফুটবলীয় ক্যারিয়ারে তার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পর্তুগালের জন্য ২০১৬ ইউরো শিরোপা উপহার দিয়েছেন। কিন্তু মেসি আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হওয়া সত্তেও জাতীয় দলের হয়ে বড় কোনো সাফল্য এখনো হাতে পাননি।
টিকে থাকার লড়াইয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই। একইসাথে ইতোমধ্যেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করা ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আইসল্যান্ড যেন কোনো সাফল্য না পায় সেদিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে আলবে সেলেস্তাদের। বৃহস্পতিবার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হবার ম্যাচটি যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না আর্জেন্টাইন সমর্থকরা।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ও কিংবদন্তী তারকা দিয়েগো ম্যারাডোনা দলের প্রধান কোচ জর্জ সাম্পাওলি ও তার মেথড নিয়ে প্রচন্ড সমালোচনা করেছেন। এমনকি সারা বিশ্ব জুড়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এমন গুঞ্জনও শোনা গেছে কোচের বিপক্ষে খোদ আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রাই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। যদিও আর্জেন্টাইন ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্লডিও টাপিয়া পুরো বিষয়টিকে ভ্রান্ত ধারণা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে আর্জেন্টাইন ফুটবল প্রধান বলেন, সত্যিকার অর্থে সাংবাদিকরা অনেক শক্তিশালী। এটা ভুললে চলবে না যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তারা কাজ করে থাকে। তাদের হাতে সেই ধরনের ক্ষমতা আছে। তবে পুরো বিষয়টি একেবারেই মিডিয়ার তৈরী। তারা কোচিং স্টাফদের সরাসরি অনুশীলনে দেখতে পায়। পুরো দলের অনুশীলন তারা প্রত্যক্ষ করে। সেখানে তাদের চোখে অনেক কিছুই ধরা পড়তে পারে। কিন্তু আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করে বলতে পারি এ ধরনের কিছুই জাতীয় দলের মধ্যে ঘটেনি।
টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট আর্জেন্টিনা যেখানে বাঁচা মরার লড়াইয়ের মুখোমুখি সেখানে প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়ান পরের রাউন্ডে যেতে হলে ড্র করলেই চলবে। তবে সেক্ষেত্রে আইসল্যান্ড যদি ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে দেয় তবে সমীকরণ সম্পণূ পাল্টে যাবে। তবে সবকিছুর পরেও নাইজেরিয়াও ভালভাবেই জানে মেসি জ্বলে উঠলে সেটা তাদের জন্য সমস্যাই বয়ে আনবে। যদিও দলের প্রস্তুতিতে মেসিকে আটকানোর সব ধরনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের ডিফেন্ডার উইলিয়াম ট্রুস্ট-একং।
তিনি বলেন, এই প্রথমবার আমরা এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলছি না যাদের সব খেলোয়াড়ই ভাল। আমরা আমাদের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে ম্যাচে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করবো।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে আহমেদ মুসার করা দুই গোলের নাইজেরিয়ার জয় নিশ্চিত হয়েছিল। আর তারপর থেকেই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে মেসির পাশাপাশি মুসার নামও সকলের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। আর পুরো বিষয়টি বেশ উভোগ করছেন মুসা।
দুই দলের এ পর্যন্ত খেলা আটটি ম্যাচেই চারটি হয়েছে বিশ্বকাপে যার মধ্যে সবকটিতেই জয়ী হয়েছে শক্তিশালী আর্জেন্টিনা। ১৯৯৮ সালের পরে প্রথমবারের মত পরপর দুটি বিশ্বকাপের ম্যাচে জয়ের অপেক্ষায় রয়েছে নাইজেরিয়া।