দেশের খবর: কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এক নেতাকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আজ রোববার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মিরপুর থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানকে আটক করা হয়েছে।’
তবে আন্দোলনকারীদের সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন কাছে দাবি করেন, ‘আমাদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, মাহফুজ খান ও ইয়ামিন—এ তিনজনকে মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের ভাসানটেক বাজারের মজুমদার মোড়ের ১২ নম্বর বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সাদা পোশাকের পুলিশ ছাড়াও পোশাকধারী পুলিশ ছিল।’
তবে উপকমিশনার মাসুদুর রহামন শুধু রাশেদ খানকে আটকের কথা স্বীকার করেছেন।
আটকের আগে নিজের বাসা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে রাশেদ খান ভয়ার্ত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাকে বাঁচান প্লিজ, আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে ধাওয়া দিয়েছে ডিবি পুলিশে। ভিডিওটি শেয়ার করুন।’ এরপর তিনি যেখান থেকে কথা বলছেন, সেই ঠিকানাও দেন।
ঘটনার পর রাশেদ খানের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, ‘রাশেদকে ডিবি পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তুলে নিয়ে গেছে বাসা থেকে। এ সময় তাঁকে অনেক মেরেছে।’ এই বলে কান্না করতে থাকেন তিনি। রাবেয়া আলো আরো জানান, তিনি এখন থানায় জিডি করতে যাচ্ছেন।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলনে বাধা দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে ১০ জনের মতো আহত হন। আহতরা অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এর পর পরই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ অধিকার ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে ‘সংবাদ সম্মেলনে বাধা ও হামলা’র প্রতিবাদে আজ থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং সারা দেশে বিক্ষোভ অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে তাঁদের কোনো কর্মসূচি নেই। আগামীকাল সোমবার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করা হবে। সারা দেশে পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানিয়েছেন, শাহবাগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কোনো কর্মসূচি নেই। আর আটকের বিষয়টি তিনি জানেন না।
এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। পরে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিলও করে। কিন্তু সেই প্রজ্ঞাপন এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।