খেলার খবর: ব্রাজিলকে বলতে গেলে একাই কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছেন নেইমার। গোটা ব্রাজিল তাই নেইমারে মুগ্ধ। কিন্তু কালও বিতর্কের কেন্দ্রে থাকলেন ব্রাজিলীয় তারকা। ম্যাচের একপর্যায়ে মেক্সিকোর মিগুয়েল লায়ুন নেইমারের পায়ে পাড়া দিলে, তিনি এমন গড়াগড়ি শুরু করেছিলেন মনে হচ্ছিল তাঁর বিশ্বকাপ বুঝি সেখানেই শেষ হয়ে গেছে। তবে পরে টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, মিগুয়েল পায়ের এমন জায়গায় পাড়া দিয়েছিলেন যেখানে বুটের স্পাইক পড়লে যে কেউই ব্যথায় কুঁকড়ে যাবে। তবে তারপরেও নেইমার পড়েছেন সমালোচনার মধ্যেই।
মেক্সিকোর বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে গোল করেছেন নেইমার। গোল করিয়েছেন সতীর্থ রবার্তো ফিরমিনোকে দিয়েও। মোট কথা, নেইমারের কাছেই হেরেছে মেক্সিকো। কিন্তু এই ম্যাচের পরেও ব্রাজিলের পত্রিকা ‘গ্লোবো’ তাঁর সমালোচনায় মুখর। তারা লিখেছে, ‘নেইমার ব্রাজিলীয়দের মন জয় করলেও উত্ত্যক্ত করছে গোটা বিশ্বকেই।’
শিরোনামটি এরপর লুফে নিয়েছে ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলো। বিবিসির প্রতিবেদক প্যাট্রিক জেনিংস তাঁর প্রতিবেদনে বলেছেন, মেসি-রোনালদোর বিদায়ের পর বড় তারকাদের মধ্যে একমাত্র নেইমারই টিকে আছেন বিশ্বকাপে। মেক্সিকোর বিপক্ষে তিনি দারুণ খেললেও নিরপেক্ষ দর্শকদের কাছে এখনো বেশ অজনপ্রিয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই ম্যাচে তাঁর অবদান এককথায় দুর্দান্ত। কিন্তু এমন কিছু সময় ছিল যখন তাঁর মধ্যে প্রগলভতা আর খেলার মধ্যে অভিনয় ফুটে উঠেছে। সংবাদ সংস্থাটির ব্যাখ্যা, ‘ছোটখাটো সুবিধা পাওয়ার জন্য নেইমারের এই আচরণ খুবই নেতিবাচক।
মেক্সিকোর বিপক্ষে কালকের ম্যাচের একটি মুহূর্তের বিশ্লেষণও করেছে বিবিসি, ‘শেষ বাঁশি বাজতে তখন মিনিট বিশেক সময় বাকি। এমন সময় নেইমার কুশীলব হয়ে অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। মেক্সিকোর মিগুয়েল লায়ুন নেইমারের গোড়ালিতে পাড়া দিলেও তিনি তাতে বিলাপ করতে শুরু করেন। যেন তাঁকে ভীষণ জোরে আঘাত করা হয়েছে। এই অবস্থায় নেইমারের সতীর্থ থেকে থেকে শুরু করে মেক্সিকোর খেলোয়াড়েরা, রেফারি, এমনকি ম্যাচ অফিশিয়ালরাও হতবাক হয়ে পড়েন। একটা চলমান ম্যাচ বন্ধ রেখে সবাই তাঁর আহাজারিতে থমকে দাঁড়িয়েছিলেন।’
ম্যাচসেরার পুরস্কার নেওয়ার পর সংবাদকর্মীরা ওই ঘটনা সম্পর্কে নেইমারকে প্রশ্ন করতেই বাগড়া দিয়ে বসেন ব্রাজিল কোচ তিতে, ‘ওরা পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছে। আমি নিজে পর্দায় দেখেছি।’ এরপর নেইমারের বক্তব্য, ‘দেখুন, এটা আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টার চেয়েও বেশি কিছু ছিল। আমি সমালোচনা কিংবা প্রশংসা নিয়ে এত ভাবি না। কারণ, এটা আপনার আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। আগের দুটি ম্যাচে আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলিনি। আমি শুধু খেলতে চাই, সতীর্থ ও দলকে সাহায্য করতে চাই।’
জেনিংস তাঁর এই প্রতিবেদনে ম্যাচের সেই মুহূর্ত নিয়ে মেক্সিকো কোচ হুয়ান কার্লোস ওসোরিওর মন্তব্য তুলে ধরেছেন, ‘এটা যেকোনো ধরনের ফুটবলেই লজ্জা। খেলাটির নেতিবাচক উদাহরণ। এটা ভণিতা।’
ভিডিও ফুটেজ দেখলে অবশ্য নেইমারকে খুব বেশি দোষ দেওয়া যাচ্ছে না। সূত্র: প্রথম আলো।