ভিন্ন স্বাদের খবর: জন্মহার বাড়াতে দ. কোরিয়ায় অফিসের কর্মীদের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে ৬৮ ঘণ্টার পরিবর্তে এখন থেকে দেশটির কর্মীরা ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন। ফলে এখন থেকে ১৬ ঘণ্টা সময় বেশি ছুটি পাবেন তারা।
স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া, অবসাদ কাটানো ও জন্মহার বাড়ানোর জন্য এ নিয়ম জারি করেছে দেশটি। ১ জুলাই থেকে ও নিয়ম চালু হয়েছে। এখন থেকে ৬৮ ঘণ্টার বদলে ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন দেশটির কর্মীরা।
বিশ্বের কম জন্মহারের দেশগুলোর মধ্য ওপরের দিকে আছে দক্ষিণ কোরিয়া। তাই জন্মহার বাড়াতে কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছে। দেশটির নেতারা বলছেন, কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাবেন নারী ও পুরুষেরা। অভিনব এ উদ্যোগের ফলে জন্ম হার বাড়বে বলে মনে করছেন দেশটির নীতি নির্ধারকেরা।
বিশ্বের অন্যতম কর্মমূখর দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসেই কাটান। তাই দেশটি কর্মঘণ্টা কমানো সংক্রান্ত একটি একটি বিল পাস করেছে। বিলে বলা হয়েছে ৬৮ ঘণ্টার জায়গায় এখন সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। জীবনযাপনের মান উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং জন্মহার বৃদ্ধির লক্ষ্যের অংশ হিসেবে সপ্তাহের কর্মঘণ্টা কমানো হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এ বিলের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু পার্লামেন্ট সদস্যরা তা আমলে না নিয়ে বিলটি পাস হয়।
২০১৬ সালে কোরীয়রা গড়ে ২ হাজার ৬৯ ঘণ্টা কাজ করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেন, ‘জুলাই থেকে আমরা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হব। বাবা-এবং মায়ের সন্তানদের আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন।’ মুন জে প্রশাসনে কর্মঘণ্টা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিগুলোকে আরও অধিক কর্মী নিয়োগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ৮০ ভাগ কোম্পানিই বাড়তি কর্মী নিতে চায় না।
এদিকে এ বছর দেশটিতে বেতন ১৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেছিলেন, ‘অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়। সুখী জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে টানা কর্মঘণ্টা বড় বাধা। এমন কর্মঘণ্টা কোনো রকম বিশ্রামের সুযোগ দেয় না। এ ছাড়া নির্বাচিত হওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম মজুরি ৭ ডলার করে বৃদ্ধি করেছেন, যা গত দুই দশকে সর্বোচ্চ।
অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক করপোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইডিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও মেক্সিকো এবং কোস্টারিকায় দীর্ঘ কর্মঘণ্টা প্রচলিত আছে। দেশটির পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী চুয়াং হুন দক্ষিণ কোরিয়ার কম জন্মহারের জন্য নারীদের অতিরিক্ত কাজ করাকে দায়ী করেছেন। ওইসিডি এর মতে, ‘কোরিয়াতে প্রতি একজন নারীর সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ১.২ ভাগ। যা বিশ্বে সর্বনিম্ন।’