বিদেশের খবর: আজকের রবিবার (৮ জুলাই) দিনটিকেই মোক্ষম সময় হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে থাইল্যান্ডের গভীর গুহায় আটকে পড়া ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করা হয়েছিলো। অভিযান শুরুর পর চার কিশোরকে উদ্ধারের খবর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।
আজ রবিবার (৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ১৩ বিদেশি ডুবুরি ও থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর অভিজাত শাখা থাই নেভি সিলের পাঁচ সদস্য এই উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
জানা গেছে, ১৩ জন উচ্চ প্রশিক্ষিত বিদেশি ও পাঁচজন থাই নেভি উদ্ধারকারী ডাইভার এ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, গুহার ভেতর গভীর পানিতে ডুবুরিদের সহায়তায় এবং অল্প পানিতে হেঁটে তাদের এক এক করে বের করে আনা হচ্ছে। একে একে সব কিশোরকে বের করে আনতে তিন-চার দিন সময় লাগতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা এ অভিযানকে ‘হয় এখনই, নয়তো কখনোই নয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এর আগে গুহা থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়ার ওপর একটি ইলাস্ট্রেশন প্রকাশ করেছিলো থাই নিউজ এজেন্সি। সেই ছবিতে দেখা গেছে, এক ডুবুরির সঙ্গে একটি ছেলেদের বেঁধে রাখা হয়েছে। আর ডুবুরির অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। ডুবুরিদের যাতে পথ ভুল না হয়ে যায় সেজন্য দড়ি বেঁধে রাখা হয়েছে। ওই দড়ি ধরে ধরে তারা সামনে এগোবেন।
গত ২৩ জুন থাইল্যান্ডের স্থানীয় সময় বিকালে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ১২ ফুটবলার ও তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচ থাইল্যান্ডের উত্তর অংশের প্রদেশ চিয়াং রাইয়ের ‘থাম লুয়াং নায় নন’ গুহায় প্রবেশ করেন। তাদের উদ্ধারে থাইল্যান্ডের স্থানীয় ডুবুরিরা ছাড়াও কাজ করছেন গুহার ভেতরে সাঁতারে বিশেষভাবে পারদর্শী বিদেশি সাঁতারুরা।
এর আগে ভাবা হয়েছিল যে আটকে পড়া দলটি নিজেরা সাঁতরিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব বাতিল করে দেয়া হয় কেননা ওই দলের সবাই সাঁতার কাটতে পারে না।
আরেকটি অপশন এমন ছিল যে, গুহার পানি কমিয়ে ফেলা গেলে দলটি হেঁটেই বের হতে পারবে। এদিকে ডুবুরিদের একটি দল কয়েকজন কিশোরকে নিয়ে ইতোমধ্যেই গুহা থেকে রওনা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে সরু ডুবন্ত প্যাসেজ দিয়ে ওই দলটিকে বের করে আনতে হবে যা বেশ চ্যালেঞ্জিং। আর ডাইভিং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দীর্ঘ সময় পানির নিচ দিয়ে চলাচল করাও আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এছাড়া ওই কিশোররা কখনও এ ধরনের যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করেনি।
এদিকে রওনা হওয়া দলটি ডুবুরিদের জন্য তৈরি বেসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবে। এভাবে ডুবুরিরা শেষ বেস পর্যন্ত ওই দলটিকে নিয়ে আসবেন, সেখান থেকে তারা হেঁটে বেরিয়ে আসার পর তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
এর পরেই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান একে একে বের করে আনা হয় আটকে পরা কিশোর ফুটবলারদের। মায়ের কোলে ফিরে আসে দীর্ঘ ১৩ দিন অন্ধকার গুহায় আটকে থাকার পরে। উদ্ধারের সাথে সাথেই কিশোর ফুটবলারদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।