জাতীয়

‘বন্দুকযুদ্ধে’ চার জেলায় পাঁচ ‘মাদক বিক্রেতা’ নিহত

By Daily Satkhira

July 11, 2018

দেশের খবর: সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছেই। অভিযানের অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত দেশের চার জেলায় মাদকের কারবারে জড়িত পাঁচজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রাজধানীর কেরানীগঞ্জে একজন, কুষ্টিয়ায় দুইজন, নাটোর ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

প্রতিটি বন্দুকযুদ্ধের কাহিনি একই রকম। ‘মাদকের কারবারি’কে নিয়ে অভিযানে বের হলে গুলি করে তাদের সহযোগীরা। আর গোলাগুলির এক পর্যায়ে নিহত হন সন্দেহভাজন মাদকের কারবারি। কখনও কখনও পুলিশের এক-দুই জন সদস্য আহতও হন।

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার মিরপুরে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন, যারা মাদক চোরাকারবারি বলে ভাষ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তারা হলেন ফুটু ওরফে মোন্না এবং ও রাসেল আহম্মেদ। এ ঘটনায় র‌্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য।

বুধবার ভোরে মিরপুর উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের আনান্দবাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়াদ্দারের ইটভাটার কাছে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত ফুটু রাজারহাট মোড় এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে এবং রাসেল একই এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।

র‌্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোহাইমিনুল জানান, মাদকদ্রব্য কেনাবেচার জন্য একদল মাদক কারবারি আনন্দবাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়াদ্দারের ইটভাটার কাছে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। র‌্যাবকে দেখামাত্র মাদক কারবারিরা গুলি ছোঁড়ে। জবাবে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এ ঘটনায় দুই র‌্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি এবং বিপুল ইয়াবা ও ফেন্সিডিল জব্দ করা হয়েছে।

কেরানীগঞ্জ

ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. নুরা ওরফে নুরু (৪৫) নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। বুধবার (১১ জুলাই) ভোরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ডায়মন্ড মেলামাইন কারখানার সামনে এ ‌‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাটোর

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাহিমালী এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে একদল মাদক বিক্রেতার বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় এক মাদক কারবারি নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন র‌্যাবের দুই সদস্য। মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে এখনো নিহতের নাম জানানো হয়নি। তবে আহত দু’জন র‌্যাব সদস্য হলেন এএসআই মনজুর ও কনস্টেবল এনামুল হক।

র‌্যাব জানিয়েছে, বুধবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযানের বিস্তারিত জানানো হবে। এ ঘটনায় বিপুল পরিমাণ মাদক, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. সোহেল রানা ওরফে সুরাইয়া সোহেল নামের এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছে। রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের সিংয়েরপুলে বুধবার ভোররাতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় দুই পুলিশ কর্মকর্তাও আহত হন। রায়পুর থানার ওসি আজিজুর রহমান এই তথ্য জানান।

ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড গুলি, ছয় রাউন্ড গুলির খোসা ও তিনশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি বলেন, মঙ্গলবার (১০ জুলাই) বিকালে লক্ষ্মীপুরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা থেকে পুলিশের তালিকাভুক্ত ২২ মামলার পলাতক আসামি সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্য অনুযায়ী রাত ৩টায় রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের সিংয়ের পুল এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘরে ইয়াবা উদ্ধারে যায় পুলিশ। তখন সোহেলের সহযোগীরা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এসময় সোহেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তার সহযোগীদের গুলিতে আহত হয়।

পুলিশ গুলিবিদ্ধ আহত সোহেলকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ওসি জানান, এ সময় এসআই মোতাহার ও এসআই গোলাম মোস্তফা আহত হন। তাদেরকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহত সোহেলের বিরুদ্ধে রায়পুর ও চাঁদপুরের হাইমচরসহ অন্যান্য থানায় অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধে ২২টি মামলা রয়েছে।