নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নৌকার স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এসময় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেকে দলীয় নৌকা প্রতীকের একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ঘোষণা করে উপস্থিত সকলের দোয়া চান। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়ন আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এং সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরে এ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফিংড়ী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো: লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদার, জেলা আ’ লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পি.পি এড: ওসমান গনি, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এস.এম শওকত হোসেন, পৌর আ’লীগের সভাপতি আবু সায়ীদ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী, জেলা যুবলীগের আহবাহক মো: আব্দুল মান্নান, সদর আ’লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, পৌর আ’লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মো. রাশিদুজ্জামান রাশি, সদর উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গনেশ চন্দ, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মনিরুল হোসেন মাসুম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক স্যামুয়েল ফেরদৌস পলাশ, জেলা তাঁঁতীলীগের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাহিদ হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মো: ময়নুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: তুহিনুর রহমান তুহিন, ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মো: সামছুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর আওয়ালীগের কার্যকারী সদস্য সবুর খান, আব্দুল মজিদ, পৌর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূর মনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফিংড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শেখ আজমির হোসেন বাবু।
সমাবেশে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমি সব সময় আপনাদের সাথে থেকে আপনাদের সাথে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার সকল কাজের সফলতা পেয়েছি আপনাদের একান্ত সহযোগিতার কারণে। এসময় তিনি বলেন, আমরা সম্মানের জন্য রাজনীতি করি, সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড ও বিশ্বসভায় তার নেতৃত্ব গুণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নে মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার ঘোষণা দিয়েছেন আগামী নির্বাচনে মাঠের জনপ্রিয়তা এবং ক্লিন ইমেজের নেতাকেই তিনি নৌকার প্রার্থী করবেন। তার প্রতি শতভাগ আস্থা আছে বলে আমি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সাতক্ষীরা-২(সদর) আসনে দলীয় মনোনয়র চাই। আমার পাশাপাশি এই মঞ্চে উপবিষ্ট আসাদুজ্জামান বাবু, এস এম শওকত হোসেন এবং মো. আবু সায়ীদও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। নেত্রী যাকেই নৌকার মনোনয়ন দেবেন আমরা প্রত্যেকেই তাকে বিজয়ী করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব। তবে নেত্রীর নিকট আমাদের এবং সাতক্ষীরা সদর নির্বাচনী এলাকার প্রত্যেক আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীর অধিকার রয়েছে জনপ্রিয় এবং কর্মীবান্ধব নেতাকে তিনি যেন মনোনয়ন দেন এমন দাবি জানানোর। তবে শেষ বিচারে আমরা নেত্রীর বিচক্ষণতা ও দুদর্শিতার উপর শতভাগ আস্থাশীল।
সভায় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদার বলেন, আমি চাই নজরুল দলীয় মনোনয়ক পাক। সে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমরা নেত্রীর কাছে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, নেত্রী যে ঘোষণা দেন তিনি সেটাই বাস্তবায়ন করেন। তিনি পদ্মা সেতু তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সকল বাধা পেরিয়ে দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। নেত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশকে ডিজিটাল করবেন। সে সুবিধা এখন বাংলার মানুষ ঘরে বসে ভোগ করতে পারছে। তিনি আরো বলেন, নেত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদকের স্পষ্ট ঘোষণা হলো- যারা দলীয় নেতকর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহার করেন না আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা নমিনেশন পাবে না।
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী যদি ভাল হয় পকেটের টাকা খরচ করা লাগে না। বাবার গোলার ধান বিক্রি করে প্রিয় নেতার জন্য ভোট করতে নামেন কর্মীরা। আর নির্বাচনে প্রার্থী যদি ভাল না হয় তাহলে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও প্রার্থীকে বিজয়ী করা যায়না এজন্য সাতক্ষীরায় আগামী জাতীয় সংসদ নিবাচনে এমন একজনকে প্রার্থী নির্বাচন করতে হবে যাতে বিনা বাধায় নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা সম্ভব হয়। তিনি আরও বলেন, নিজ দলের নেতা তাই ভাশুরের নাম নিতে নেই। কিন্তু আপনারা জানেন, ভাশুর কে। যারা প্রাইমারি স্কুলের নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরী নিয়োগে ঘুষ নিয়েছেন, যারা পুলিশে লোক নিয়োগে ঘুষ নিয়েছেন তাদের কোনক্রমেই নেত্রী আর দলীয় মনোনয়ন দেবেন না- এমনটাই আমরা বিশ্বাস করি। যারা সাড়ে ৪ বছর নেতা-কর্মী দূরে ঠেলে রেখে এখন তাদেরকে দাওয়াত করে খাইয়ে ভোলাতে চাইছেন তারা আর নমিনেশন পাবেন না।
পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মাদ আবু সায়ীদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এদেশের হাল ধরেছেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। তিনি আরো বলেন, গত নিবাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে এমন একজনকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল যিনি সাতক্ষীরায় টাকার বিনিময় ছাড়া কোন কাজ করেননি। নেত্রী এবার সরাসরি ঘোষণা করেছেন এধরনের দুর্নীতির সাথে যারাই জড়িত তাদেরকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোমিনেশন দেওয়া হবে না। আমরাও নেত্রীর কাছে কর্মীবান্ধব, জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলী বলেন, যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত নেত্রী তাদের নোমিনেশন দেবেন না এটা তিনি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন। যারা জনগণের সাথে ভাল ব্যবহার করেন, নেত্রী যদি তাদের নোমিনেশন দেয় তাহলে সাতক্ষীরায় নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা সহজ হবে।
পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশি বলেন, সাতক্ষীরার যেসব প্রবাসী নেতা এমপি হয়ে নেতাকর্মীদের টাকা নিয়ে ঢাকায় বড় হোটেল করে তাদের আর সাতক্ষীরার জনগণ চায়না। টাকার বিনিময় পুলিশে চাকুরি, নৈশ প্রহরীতে চাকুরি দেওয়ার নামে দলীয় নেতা কর্মীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে তারা ঢাকায় চলে যান। কিুছদিন পর আবার সাতক্ষীরায় আসেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এধরনের নেতারা যাতে নোমিনেশন না পায় সেজন্য নেত্রীর কাছে আহবান করেন তিনি।
জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকে দলীয় মনোয়নয় দিবে জেলা যুবলীগের সকল নেতাকর্মীবৃন্দ তার পক্ষেই কাজ করবে এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগ এগিয়ে যাবে।