স্বদেশ: বুধবার অজ্ঞাত ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে আহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা আজ সকালে মারা যাবার পর পরিবার অভিযোগ করছে উত্ত্যক্তকারীর হামলাতেই মারা গেছে সে। নিহত ছাত্রীর বাবা ঢাকার সিদ্দিকবাজারের বাসিন্দা রমজান আলী বলেছেন, তিনি ও তার পরিবার বিশ্বাস করে, উত্ত্যক্তকারীই ছুরি নিয়ে তার মেয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে। এর আগে, বুধবার সুরাইয়ার ওপর হামলার পর তার মা রমনা থানায় একটি মামলা করেছিলেন, যাতে বলা হয়েছে, তিনি ও তার মেয়ে ঢাকার ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটের এক দর্জির দোকানে পোশাক বানাতেন। সেখানে যোগাযোগের জন্য দেয়া মোবাইল নম্বরে ঐ দোকানের এক কর্মচারী ওবায়েদ তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। যেকারণে এক পর্যায়ে মোবাইল নম্বরটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে, এ নিয়ে তিনি পুলিশে কোন অভিযোগ জানাননি সুরাইয়ার মা। পরে ঐ কর্মচারী তার মেয়েকে স্কুলের সামনে উত্ত্যক্ত করতো বলে তাকে তার মেয়ে জানিয়েছিল। এদিকে সুরাইয়ার মৃত্যুর খবর স্কুলে ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ হত্যার প্রতিবাদে ও অপরাধীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা কাকরাইল মোড় অবরোধ করে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানিয়েছেন, তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে দর্জির দোকানের মালিকসহ বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। সেই সঙ্গে ছুরিকাঘাতের ঘটনা যখন ঘটে, সেসময় প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ এবং চেহারার বর্ণনা মিলিয়ে দেখছেন। সুরাইয়া আক্তার রিশা বুধবার দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্কুল সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের ওপরে এক যুবক তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আহত ছাত্রীটির চিৎকারে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবক ছুটে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আজ সকালে সে মারা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইভ টিজিং এর ঘটনায় এমন মৃত্যুর কথা শোনা যায়নি, কিন্তু, মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক হিসেব অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এ সময়ের মধ্যে সারাদেশে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ১৪৮জন। এর মধ্যে ইভ-টিজিং এর ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৫৭জন আহত হয়েছেন। এ কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েছে অন্তত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর।