জাতীয়

পুলিশের সব প্রতিবেদন দেখতে চান ডিসিরা

By Daily Satkhira

July 25, 2018

দেশের খবর: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিভাগ নিয়ে ১৬টি প্রস্তাব এনেছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। এরমধ্যে রয়েছে, জেলায় সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর পুলিশি প্রতিবেদন। দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন দেখতে চান তারা। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) শুরু হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনের পঞ্চম অধিবেশনে (২৬ জুলাই) এই প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে। প্রস্তাবগুলোর পক্ষে যুক্তিসহ বাস্তবায়নের সুপারিশও করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব জানা গেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চরাঞ্চলে একটি নৌথানা গঠনের জন্য প্রস্তাব এনেছেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক। অন্যদিকে সঠিকতা ও মেয়াদ যাচাইয়ের জন্য সারাদেশের সব জেলা থেকে ইস্যু করা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের সব তথ্য একটি জাতীয় অনলাইন ডাটাবেইজে সংরক্ষণের প্রস্তাব করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন আনসার নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে একটি থানা কিংবা তদন্ত কেন্দ্র অথবা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তরের জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ মানুষের জান-মাল রক্ষায় থানা স্থাপন করা প্রয়োজন।

সিলেট মহানগর এলাকায় সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর প্রতিবেদন মহানগর পুলিশ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সরবরাহ না করায় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অগোচরে থাকে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানতে চান। এ জন্য সিলেট মহানগর এলাকায় সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর প্রতিবেদন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক।

মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্রের ভেতরে স্মৃতিসৌধ, জাতির পিতার ভাস্কর্যসহ মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মিউজিয়াম, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও মুক্তিযুদ্ধকালের বিভিন্ন প্রতীকী স্থাপত্যসহ বাংলাদেশের মানচিত্র রয়েছে। অনেক ভিআইপি ও ভিভিআইপি কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করে থাকেন। এ জন্য মুজিবনগর নামে আনসার ব্যাটালিয়ন স্থাপন করার প্রস্তাব করেছেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক।

মাঠ প্রশাসনে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিজস্ব ও সরকারি কাজে সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সচিবালয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ঢাকার জেলা প্রশাসক প্রস্তাব করেছেন।

কারাবন্দিদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সব কারাগারে সহকারি সার্জন ও ডিপ্লোমা নার্সের শূন্য পদগুলো পূরণ ও অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্ধের প্রস্তাব করেছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক। বগুড়া, টাঙ্গাইল ও ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক প্রস্তাব করেছেন জেলা কারাগারগুলোতে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের জন্য।

নৌ, অগ্নি দুর্ঘটনা দ্রুত প্রতিরোধে ও উদ্ধার কাজ তরান্বিত করতে বরিশাল বিভাগের প্রতিটি জেলায় একটি করে নৌ ফায়ার স্টেশন স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার। ডুবুরির সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

বিভাগীয় শহরে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাদকদ্রব্য টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন খুলনা ও মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক এবং বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার। এর সপক্ষে যুক্তি হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০’-এর বিভিন্ন ধারার অপরাধে মামলা দায়েরের পর আলামত হিসেবে বিভিন্ন মাদকের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়। এ জন্য টেস্টের ফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এতে আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়। ফলে অপরাধও বেড়ে যায়।

কারাবন্দিদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে প্রস্তাব করেছেন ঝিনাইদহ ও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক। সোনাহাট স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালুর প্রস্তাব করেছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক।

‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০’-এর ১৯ নম্বর টেবিলে অক্সিমরফোন হাইড্রোক্লোরাইড (ও মরফোন) নামক মাদককে তফশিলভুক্ত করে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব করেছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি দিনাজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ফেনসিডিলের পরিবর্তে এর ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাদক আইনে এই নতুন মাদক সম্পর্কে কোনও বিধান না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায়, বেকারত্ব হ্র্যাস, গণ-উপদ্রব ও প্রকাশ্য জুয়া খেলার পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ২৯০ এবং বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন-১৯৬৭-এর ৪ ধারার জরিমানার পরিমাণ বাড়াতে প্রস্তাব করেছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক।