দেশের খবর: রাজধানীর বিমান বন্দর সড়কের কুর্মিটোলা এলাকায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেছে। এতে পুরো রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল।
রাজধানীর সিটি কলেজ এবং ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাজধানীর অন্যতম প্রধান সড়ক মিরপুর রোডের সাইন্সল্যাব ওভারব্রীজের নিচে অবস্থান করে। কলেজপড়ুয়া ছাত্ররা গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত পরিবহন উভয়েরই চলাচল বন্ধ করে দেন। এসময় পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বাধা দেয়া হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ীদের ফাঁসি ও নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবিতে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। তবে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানটিই ঘুরেফিরে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিলো এই পথজুড়ে। আন্দোলন এবং স্লোগানের এক সময় পুলিশের একটি টহল গাড়িকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মুখে উলটোপথে ফিরে যেতে হয়।
এসময় একজন ছাত্র সাংবাদিকদের বলতে থাকেন, দোষ আমাদের না, দোষ সালাম জব্বার রফিকের, তারা আমাদের শিখিয়েছেন ছাত্রদের প্রতিবাদ করতে হবে। শেখ মুজিবর রহমান আমাদের মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কোথায় মুক্তি!
আরেকজন বিক্ষুব্ধ ছাত্র বলেন, সরকার শাজাহান খানকে কিছু বলে না আর ছাত্রদেরকে পিটায়।
তারা আরো বলেন, দোষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনিই আমাদের শিখিয়েছেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিন্তু আমাদের মুক্তি নাই।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিটি কলেজ ও ইম্পেরিয়াল কলেজসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব ওভারব্রিজের নিচের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের এই অবরোধ রোগী, বয়স্ক নাগরিক এবং পরীক্ষার্থীদের জন্য নয়।
শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো জানায় সেগুলো হলো নৌ পরিবহনমন্ত্রীর সকল সংসদীয় কমিটি, মালিক-শ্রমিক ফেডারেশন ও মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করা, ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারের ন্যায্য দাবি পূরণ, পেশাদার লাইসেন্স প্রদানে স্বচ্ছতা, সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি, বিগত দিনের সকল দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় ওভারব্রিজ, সকল প্রকার দলীয় আচরণ ত্যাগ করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ আইন প্রণয়ন, ক্ষতিগ্রস্তদের বাস্তবসম্মত ক্ষতিপূরণ, গাড়ির ফিটনেস ও শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকর করা।