আন্তর্জাতিক

ইমরানের শপথ অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন মোদি

By daily satkhira

August 01, 2018

বিদেশের খবর: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জোট সার্কের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করছেন। তেমনটা হলে এ নেতাদের মধ্যে রাখা হতে পারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়ায় ইমরানকে মোদি শুভেচ্ছা জানানোর পরদিন মঙ্গলবার পিটিআইপ্রধানের এ পরিকল্পনার কথা জানান দলের এক নেতা। পাকিস্তানের গত বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে ১১৫ আসন পেয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ইমরানের পিটিআই। এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৭ আসন না পেলেও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত রাজনীতিক ও অন্য সমর্থক দলগুলোকে নিয়ে সরকার গঠনের দিকে এগোচ্ছেন ইমরান। গত সোমবার এ নেতা জানান, আগামী ১১ আগস্ট তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি ফোন করে ইমরানকে শুভেচ্ছা জানান। এ ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, ‘প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির চেয়ারপারসন ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁর দল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘পাকিস্তানের গণতন্ত্র আরো গভীরে শিকড় গেড়ে বসবে, এমন প্রত্যাশা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গোটা অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নের স্বপ্নের ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।’ মোদির শুভেচ্ছার জবাবে ধন্যবাদ দেন ইমরান। এ ছাড়া ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের সমাধান প্রসঙ্গে আলোচনার ওপরও জোর দেন পিটিআইপ্রধান। দুই দেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের ব্যাপারে ইমরানকে উদ্ধৃত করে পিটিআইর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’ সেই সঙ্গে ‘দারিদ্র্যের ফাঁদ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে যৌথ উদ্যোগের’ কথাও বলেন ইমরান। মোদিকে তিনি বলেন, ‘সংকট সমাধানের পরিবর্তে যুদ্ধ ও রক্তক্ষয় করতে থাকলে তাতে শোক নেমে আসবে।’ মোদির সঙ্গে ইমরানের ফোনালাপের পরদিন এক পিটিআই নেতা বলেন, ‘তেহরিক-ই-ইনসাফের কোর কমিটি মোদিসহ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ পিটিআইর এ নেতা মোদির শুভেচ্ছাবার্তাকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় সূচনার ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। এদিকে ইমরানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনায় না করেননি পিটিআইর মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনমুক্তির পর থেকে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব অব্যাহত আছে। বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়ই এ দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। ২০১৬ সালেও এক ইস্যুর জেরে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বেড়ে যায়। ওই বছর ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসীদের হামলা এবং জবাবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পিটিআই নেতা ইমরানের সঙ্গে ভারতের সরকারপ্রধানের কথোপকথন সেই উত্তেজনা নিরসন করতে পারে বলে আশা করছেন রাজনীতিকরা।