খেলা

সিরিজ জয়ের আশায় সাকিব

By daily satkhira

August 02, 2018

খেলার খবর: একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না সাকিবের মনে উঁকি দেওয়া সম্ভাবনাকে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট খুইয়েও তো ১১ ওভারে ১০০ ছুঁয়েছিল বাংলাদেশ। অবশ্য এমন মারমুখী ব্যাটিং প্রদর্শনীর বিবর্ণ দিকটা দৃষ্টি এড়ায়নি অধিনায়কের। ফ্লোরিডার সেন্ট্রাল ব্রোওয়ার্ড রিজিওনাল পার্কে সিরিজের শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে। যে মাঠ তো বটেই, আমেরিকাতেই প্রথমবার ক্রিকেট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তবে সাকিব আল হাসানের ব্যাপারটা ভিন্ন। বৈবাহিক সূত্রে তিনি মার্কিন মুল্লুকের জামাই। আর ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ সূত্রে ফ্লোরিডার এ স্টেডিয়াম তাঁর চেনা। তাই প্রথম টি-টোয়েন্টি হেরেও সিরিজ জয়ের ব্যাপারে যথেষ্টই আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেন্ট কিটসে ক্ষণে ক্ষণে আশাজাগানিয়া নৈপুণ্য আর ব্রোওয়ার্ডের উইকেটের চরিত্রই আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে সাকিবকে।সিপিএলে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছি ফ্লোরিডার মাঠে। ওখানে স্ট্রোক খেলা অত সহজ না। উইকেট কিছুটা স্লো, যা আমাদের সুবিধাই দেবে। সিপিএলে ১৫০-১৬০ রানের বেশি হতে দেখিনি। তা ছাড়া মনে হয় ওখানে আমরা বেশি সমর্থনও পাব’—৭ উইকেটে হারের পর পুরস্কার বিতরণী সেরে এসে বেশ জোর দিয়েই কথাগুলো বলেছেন সাকিব আল হাসান। আমেরিকায় তাঁর ক্রিকেট অভিজ্ঞতায় না হয় ভরসা রাখা যায়। কিন্তু সেন্ট কিটসে ব্যাটসম্যানরা যে অপরিকল্পিত ব্যাটিং করেছেন, তাতে আবার আস্থা রাখা যাচ্ছে না। তবে সাকিব বিশ্বাস করেন, ‘আমাদের একজন ব্যাটসম্যান যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারত, তাহলে স্কোরটা আরো বেশি হতো। প্রথম ওভারে ২ উইকেট হারানোর পরও কিন্তু আমরা খেলাটা ধরে ফেলেছিলাম। আমি আর লিটন একটা সুযোগ তৈরি করেছিলাম। মুশফিক ভাই এবং রিয়াদ ভাইয়ের মধ্যে একটা ভালো পার্টনারশিপ হয়েছিল। ওই সময় মুশফিক আউট না হলে কিংবা রিয়াদ ভাই যদি শেষ পর্যন্ত থেকে যেতে পারতেন…।’ এমন অনেকগুলো ‘যদি’র মাঝেই যেন সাফল্যের সূত্র খুঁজে পেয়েছেন অধিনায়ক। একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না সাকিবের মনে উঁকি দেওয়া সম্ভাবনাকে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট খুইয়েও তো ১১ ওভারে ১০০ ছুঁয়েছিল বাংলাদেশ। অবশ্য এমন মারমুখী ব্যাটিং প্রদর্শনীর বিবর্ণ দিকটা দৃষ্টি এড়ায়নি অধিনায়কের, ‘রান রেট ঠিক থাকলেও ততক্ষণে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলি আমরা। পরের ৯ ওভারে ৪৩ রানের বেশি তুলতে না পারার কারণও এটা। আসলে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা উইকেট হারিয়েছি। টি-টোয়েন্টিতে এভাবে উইকেট হারালে ম্যাচে ফিরে আসা কঠিন।’ এর মধ্যে আবার বৃষ্টি বাগড়া দেওয়ায় ক্যারিবীয়দের সামনে নির্ধারিত হয় নতুন লক্ষ্য— ১১ ওভারে ৯৫ রান। তাদের এমন সব ব্যাটসম্যান আছেন, যাঁরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারেন এমন স্বল্পদৈর্ঘ্যের চ্যালেঞ্জ। তবু মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত প্রথম ওভার আর স্পিনের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের অস্বস্তিই অধিনায়কের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে, ‘আমাদের বোলিংটা আজ ভালো হয়েছে। তবে এত কম রান নিয়ে তো লড়াই করা কঠিন। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে বেশ কয়েকজন টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান আছে। আন্দ্রে রাসেল একাই তো ম্যাচটা শেষ করে দিল। এর পরও এই হার থেকে ইতিবাচক অনেক কিছু আছে আমাদের জন্য। খারাপের চেয়ে ভালোটাই বেশি নিচ্ছি।’ খারাপের শুরুটা ওয়ানডে সিরিজের সেরা তামিম ইকবালকে দিয়ে। অ্যাশলে নার্সের করা ইনিংসের প্রথম বলটাই ডাউন দ্য উইকেটে এসে চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনারকে সামনে এগোতে দেখেই আরেকটু টেনে দেন ক্যারিবীয় অফস্পিনার। অতঃপর স্টাম্পড হয়েছেন তামিম। একজন অভিজ্ঞ এবং ইনফর্ম ব্যাটসম্যানের এমন অ্যাপ্রোচের ব্যাখ্যায় বোধগম্য কারণেই সমালোচনা করেননি সাকিব, ‘দেখুন, ব্যাটিংয়ে একেকজনের একেক অ্যাপ্রোচ থাকে। তবে তামিম ওটা ছক্কা কিংবা বাউন্ডারি মেরে দিলে কিন্তু সবাই অন্য রকম কথাই বলত। আমি বলব না অ্যাপ্রোচে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল। প্রত্যেকটা ব্যাটসম্যানেরই গেম প্ল্যান থাকে। সবারই লক্ষ্য থাকে বড় ইনিংস খেলার। দায়িত্বটাও তারই, সেটা আমি থেকে শুরু করে সবার। তবে আমাদের মূল সমস্যাটা হয়েছে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের একজনও বড় ইনিংস খেলতে পারিনি। সব দলেই দেখবেন কোনো না কোনো ব্যাটসম্যান ইনিংসটাকে টেনে নিয়ে যায়। আমরা সেটা পারিনি। এই উইকেটে রান করা সহজ ছিল। তবু আমরা কেউই বড় স্কোর করতে পারিনি। এটাই হতাশার। আমি চাইব পরের দুই ম্যাচে যেন এই ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয়।’ সেসব ভুল আত্মবিশ্বাসের ডানার ঝাপ্টায় উড়ে যাবে বলে বিশ্বাস সাকিবের, ‘সত্যি কথা বলতে আজকের পর আমার বিশ্বাসটা আরো বেড়েছে। প্রথম ম্যাচের আগে একটু দ্বিধায় ছিলাম। তবে এখন অনেক বেশি করে মনে হচ্ছে জেতা সম্ভব। আমি মনে করি আজকের পর আমাদের আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকা উচিত। ওদের সঙ্গে অনেক ভালোভাবেই জেতা সম্ভব। শুধু একটু বুদ্ধি খাটাতে হবে।’ ‘বুদ্ধি’ বলতে সম্ভবত ব্যাটিংয়ে সঠিক পরিকল্পনার কথাই বুঝিয়ে থাকবেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই যখন হারের প্রধানতম কারণ বলে মনে করছেন তিনি।