জাতীয়

পরিস্থিতি বুঝে ‘নরম গরম’ পদক্ষেপ

By daily satkhira

August 04, 2018

দেশের খবর: রাজপথের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি অসহনীয় মাত্রায় সহিংস হয়ে উঠলে পরিস্থিতি বুঝে সীমিত পর্যায়ে কঠোর হবে সরকার। তবে কোনোভাবেই এখনই চূড়ান্ত শক্তি প্রয়োগ করা হবে না। বর্তমান বাস্তবতায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই বার্তা দিতে চায় যে, বয়স যাই হোক না কেন আইন হাতে তুলে নেওয়া কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। আইন ভঙ্গ করলে সব বয়সের নাগরিকের জন্য সাজার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সরকার চায় না কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে কোনো শক্ত গ্রুপ রাস্তায় দাঁড়াক। এতে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি কার্যালয় ও র‌্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় সংশ্নিষ্টরা চলতি সপ্তাহ থেকে ‘নরম-গরম’ পদক্ষেপ নেবেন বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সরকার প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। তবে এখন কেউ ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করে রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করলে আমাদের বুঝেশুনে শক্ত হতে হবে। এরই মধ্যে এ ধরনের বার্তা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে ঘিরে চলমান কর্মসূচিতে সরকার নানা হিসাব-নিকাশ করে চুপচাপ ছিল। রাস্তা অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সংযত হয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সরকারও শুরু থেকেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে আসছে। তবে পরবর্তীতে শত শত গাড়ি ভাংচুর ও জ্বালাও-পোড়াওকে ‘অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে মনে করছেন তারা। দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা জড়িতদের বিচার দাবিতে রাস্তায় দাঁড়ালে সরকারও তাদের প্রতি নানাভাবে সহমর্মিতা জানায়। তবে সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে ‘সুযোগ সন্ধানী’ গোষ্ঠী যুক্ত হয়েছে বলে দাবি করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলেছে রাস্তায় ভাংচুর ও জ্বালাও-পোড়াও এবং সরকারি স্থাপনায় হামলা চেষ্টার বিষয়টি। তারা মনে করছে, শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে রাজপথে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ-র‌্যাবসহ সরকারি সংস্থাকে ক্ষেপিয়ে তুলছে চাচ্ছে কেউ কেউ, যাতে তারা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে খুব বেশি সময় বাকি নেই। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ব্যাপারে সরকার শুরু থেকে চুপচাপ ছিল। কিন্তু কর্মসূচি নিয়ে চলমান পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখা হচ্ছে। জানা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন থেকে সড়কে সড়কে আরও বেশি দৃশ্যমান হবে। কেউ আইন হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিত্যদিনের খাবার-সামগ্রী চলাচলে যাতে কোনো ব্যাঘাত না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া অতীতে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে যারা রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সব স্থাপনায় রাখা হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। এদিকে অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, আজ শনিবারও তারা রাস্তায় নামতে পারে। তবে তারা ভাংচুর-জ্বালাও-পোড়াও করতে চায় না।