দেশের খবর: ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে আটক করা হয়েছে। শনিবার রাতে তাকে উত্তরা থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার দুপুরে ধানমন্ডির জিগাতলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একদল যুবকের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় ছাত্র নিহতের গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে ওই গুজবের পক্ষে-বিপক্ষে তথ্য আসার মধ্যেই বিকেল ৪টার দিকে সংঘর্ষে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরতদের মধ্যে দুই ছাত্রের মৃত্যু ও একজনকে চোখ তুলে নেওয়ার ‘খবর’ নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন অভিনেত্রী নওশাবা। এক মিনিটের ৩৭ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওতে বিমর্ষ ও আতঙ্কিত দেখা যায় নওশাবাকে। লাইভের শুরুতেই তিনি বলেন, আমি কাজী নওশাবা আহমেদ বলছি, আপনাদেকে জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে, দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। লাইভে তিনি সকলকে এক হওয়ার অনুরোধ জানান। নওশাবা বলেন, আপনারা সবাই এক সাথে হোন। ওদের প্রটেকশন দিন প্লিজ। বাচ্চাগুলো আনসেইফ অবস্থায় আছে। আপনারা রাস্তায় নামেন প্লিজ। এই অভিনেত্রী আরও বলেন, এদেশের নাগরিক হিসেবে, মানুষ হিসেবে রিকোয়েস্ট করছি, জিগাতলায় স্কুলের ছেলের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ফেসবুক লাইভৈ নওশাবা বলেন, একটু আগে অ্যাটাক করেছে, ছাত্রলীগের ছেলেরা। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখনই নামবেন, আপনাদের বাচ্চাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবেন। নওশাবার ওই ফেসবুক লাইভ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। গুজবের কথা শুনেই শিক্ষার্থীরা ছুটে গিয়েছিলেন বলেও এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুর দুইটার পরে চার শিক্ষার্থীকে ‘ধরে নিয়ে’ যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এসময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাইন্সল্যাব এলাকা ও জিগাতলা মোড়ে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে ছুটে যায়। এরপর কার্যালয়ে থাকা আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে শিক্ষার্থীরা। এসময় পাশে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের কার্যালয় লক্ষ্য করেও বিক্ষুব্ধরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এরপরই শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এরপর তারা সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয়েছে কিনা- তা ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলেন। আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধি দলের একজন ঢাকা আইডিয়াল কলেজের ছাত্র কাজী আশিকুর রহমান তূর্য বলেন, দুপুরে হঠাৎ কিছু লোক বলে, আমাদের চারজন বোনকে আর কয়জন ছেলেকে আওয়ামী লীগ অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের মেরে ফেলা ও আটকে রাখার যে তথ্য আমরা পেয়েছিলাম, তা গুজব। গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ছুটি এসেছিল। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ অফিসে এসে দেখলাম, এমন কিছু ঘটেনি। আপনারা কেউ গুজবে কান দেবেন না।