জাতীয়

সংসদের সুবিধা নিয়েও উপস্থিত থাকেন না এমপিরা

By Daily Satkhira

December 03, 2016

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সকল সুবিধা ভোগ করেও সংসদে উপস্থিতিসহ সংসদীয় কমিটির বৈঠক ও অন্যান্য সংসদীয় কর্মকাণ্ডে উপস্থিত থাকেন না এমপিরা। আগামী কাল রোববার থেকে দশম সংসদের ১৩ তম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। জাতীয় সংসদের গত ১২ টি অধিবেষন পর্যাদলোচনা করে দেখা যায় অধিকাংশ অধিবেশনে এমপিরা উপস্থিত না থাকায় কোরাম সংকট দেখা দিয়েছে। অবার সংসদীয় কমিটিতে উপস্থিতি না থাকায় অনেক কমিটির বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। অথচ আর্থিকসহ সকল সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন এমপিরা।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় এমপিদের অনাগ্রহ স্পষ্টতই ধরা পড়েছে। বাজেট আলোচনার প্রথম দিনেই বক্তা সঙ্কটে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এমনকি বাজেট অধিবেশনের অধিকাংশ দিন অর্থমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দুইজনই অনুপস্থিত ছিলেন। অন্য এমপিরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বাজেট আলোচনার জন্য মোট ৪৫ ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ১০ ঘণ্টা বিরোধী দলের। বাকি সময়টা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যসহ সরকারি দলের। কিন্তু আলোচনার জন্য বিরোধী দলের একজন সদস্যের নামও জমা দেয়া হয়নি। সরকারি দলের এমপিরা প্রধানমন্ত্রীর ভয়ে অনেকেই উপস্থিত থাকলেও আলাচনায় অংশ নিতে তাদের অনীহা দেখা গেছে।

অধিবেশনে হাজিরা দেওয়ার ক্ষেত্রে এমপিদের উদাসীনতা নতুন কিছু নয়। স্থায়ী কমিটির সভাগুলোতে এমপিদের গড় হাজিরার বিষয়টি দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। কমিটির সদস্য হিসেবে প্রতি সভায় হাজিরার জন্য সম্মানী, কমিটি ভাতার পাশাপাশি বিমানের টিকিট দিয়েও সংসদীয় কমিটির সভায় পাওয়া যায় না এমপিদের। এ নিয়ে একাধিক কমিটির সভাপতিকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।

চলতি সংসদে কোরামের অভাবে সংসদীয় কমিটির সভা মুলতবি করার নজিরও দেখা গেছে। এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিকে কোরাম বলে বিবেচনা করা হয়। অধিকাংশ সভায় অনুপস্থিতির হার অর্ধেকের বেশি। ৩ থেকে ৫ জন সদস্য নিয়েই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সভা। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তিনজনের উপস্থিতিও না থাকার নজির রয়েছে।

এ পর্যন্ত দশম সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন সমাপ্ত হলেও অনেক কমিটিই সাকুল্যে ছয়টি বৈঠক করতে পেরেছে। অথচ প্রতিটি কমিটির জন্য মাসে কমপক্ষে একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে।

সংসদীয় কমিটির প্রধানরা মন্ত্রীর পদমর্যাদায় সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হলেও কাজের প্রতি তাদের অনীহা দেখা গেছে। এই অনীহা থেকে তারা সংসদভবনে নিজেদের কার্যালয়ে হাজির হন না।

সংসদের হিসাব শাখা জানায়, একজন এমপি নির্ধারিত ১০টি অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে মাসিক পারিতোষিক ও ভাতা পান ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্য থেকে যারা এমপি হোস্টেলে থাকেন তাদের ফ্ল্যাট ভাড়া বাবদ কাটা হয় ৪০০ টাকা। এ ছাড়া কমিটির সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য এমপিরা সম্মানী ভাতা পান এক হাজার টাকা। সভার আগের দুই দিন ও পরের দুই দিনের জন্য কমিটি ভাতা পান ৮২৫ টাকা হারে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। কমিটি সভায় যোগদানের জন্য পান বিমানের টিকিটের দেড়গুণ ভ্রমণ ভাতা। এর বাইরেও ভ্রমণ ভাতা পান এমপিরা। কিন্তু সুবিধা নিলেও এ সংক্রান্ত কাজ করছেন না এমপিরা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংসদে শক্তিশালী বিরোধীদল না থাকার করণে সংসদের কর্মকান্ডে আগ্রহ হারিয়েছে সাংসদরা । তাদের ভাল-মন্দ কাজের কোন আলোচনা করার মত কেউ নেই। এ করণে অনেক সংসদ সদস্য সুবিধা নিয়ে কার্যক্রমে অংসগ্রহণ করছে না।