জাতীয়

বিআরটিএতে উপচেপড়া ভিড়, সক্রিয় দালাল চক্র

By daily satkhira

August 07, 2018

দেশের খবর: যানবাহনের লাইসেন্স, ফিটনেস সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ঠিক করাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে এখন গাড়ির চালক ও মালিকদের উপচেপড়া ভিড়। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় সেবা নিতে বুথগুলোতে লম্বা লাইন ধরে আছেন সেবাপ্রার্থীরা। কথা বললে তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। জানান, কার্যালয়ের সামনে সক্রিয় দালাল চক্রের কথাও। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই আমরা তো অনেক কাজ ফালাইয়া রাইখা আসি। আমাদের যদি আর দুইটা কাউন্টার বাড়াইয়া দিত, তাইলে তো আমাদের এই সিরিয়ালে পড়তে হকো না।’ আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার কারণে ভিড় বাড়ছে, সবাই সচেতন হচ্ছে। বাট মনে হয়, আধা ঘণ্টা অলরেডি হয়ে গেছে। সামনে অন্তত হাজার খানেক লোক আছে সামনে।’ এদিকে, শুধু নতুন লাইসেন্স নয় গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নবায়নেরও ধুম পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট গ্রহণের জন্য। বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ ফিটনেসের লাইনে এখন সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের যানবাহন।গাড়ির ফিটনেস ঠিক করতে আসা খাজা বাবা পরিবহনের এক বাসচালক বললেন, ‘আমরা আসছি ফিটনেস করার জন্য গাড়ির। গাড়ির ফিটনেসের ডেটটা ঠিক ছিল না। ওইডা আরকি ঠিক করানোর জন্য আসছি।‘ তবে বিআরটিএতে সেবাগ্রহীতাদের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দালালদের তৎপড়তাও। বাড়তি টাকা দিলেই দ্রুত কাজ হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন সাধারণ লোকজন। একজন বলেন, ‘যত ভালো ড্রাইভার হোক, সে যদি ১০০ বছর বয়স্কও হয়, ফেল। পাস করে ওই যে যারা টাকা দেয়। ওই ভাবে দালাল আছে।’ কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, দালালদের সক্রিয় অবস্থান। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে থাকা অতিষ্ঠ মানুষদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন নিজেই। কেউ আবার প্রকাশ্যেই চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে গেছেন। টাকা খরচ করে দ্রুত কাজ করিয়ে নিতে মানুষই চলে যাচ্ছে তাদের কাছে। চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে থাকা একজনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তারা মানুষের কাজগুলো সহজ করে দিয়ে বিনিময়ে কিছু বকশিশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘মনে করেন, ব্যাংকের টাকা জমা দিয়া যেইভাবে যেইভাবে সিস্টেম হয়। ওইটা তো বললামই। সাড়ে তিন হাজার পরীক্ষা-টরীক্ষা ওইখানে লাগে তো। ওই জন্য।’ তবে, জানতে চাওয়া হলে দালালদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন বলে দাবি করেন বিআরটিএর মিরপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মাসুদ আলম। মাসুদ আলম বলেন, ‘দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আমরা কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতেছি। দালালের কাছ থেকে সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে সর্বোচ্চ ইয়া দিছি। পাশাপাশি দালাল, বা দালালের সঙ্গে সখ্যতা কোনো আনসার বা কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিব।’ তবে, লম্বা সময় লাগলেও কেউ কেউ টাকা ছাড়াই কাজ করিয়ে নিচ্ছেন বিআরটিএ থেকে। এক নারী বলেন, ‘দালাল ধরলে এক মাসের মধ্যে করা যায়, সেটা আমরা করি নাই। আমরা লিগ্যাল ওয়েতে করছি। আট মাস লাগছে।’ এদিকে, বাড়তি চাপ সামলাতে এখন শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে বিআরটিএ কার্যালয়।