জাতীয়

জরুরি চিকিৎসা না দিলেই শাস্তি

By daily satkhira

August 09, 2018

দেশের খবর: সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে বা অবহেলা করলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রেখে সরকারের করা নীতিমালা গেজেট আকারে জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও সহায়তাকারী সুরক্ষা প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ শিরোনামে করা নীতিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসংক্রান্ত আইন না হওয়া পর্যন্ত এ নীতিমালা আইন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন। সরকারের দাখিল করা নীতিমালার দুটি ধারা পরিমার্জন করে রায় দেন আদালত। রায়ে আহত রোগী বহনের জন্য প্রতিটি হাসপাতালে কয়টি অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে, রোগের ধরন অনুযায়ী এসব অ্যাম্বুল্যান্সে কী কী সুবিধা থাকবে, তা নির্ধারণ করে একটি ‘জাতীয় অ্যাম্বুল্যান্স কোড’ করতেও বলা হয়েছে। আদালতের রায়ের পর রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, কয়েক দফা সংশোধনের পর সরকার একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে আদালতে দাখিল করে। আদালত দুটি ধারায় কিছু পরিমার্জন করে ওই নীতিমালা চূড়ান্ত করেছেন। রায়ের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে এই নীতিমালা গেজেট আকারে জারি করতে বলেছেন আদালত। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, আহত ব্যক্তির চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হচ্ছে কি না, তা মনিটরিংয়ের জন্য সরকার একটি সেবা সেল গঠন করবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তাকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনোভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। তবে সহায়তাকারীর মারাত্মক অবহেলা বা অসৎ উদ্দেশের ফলে আহত ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই সহায়তাকারী স্বীয় দায় এড়াতে পারবেন না। নীতিমালায় বলা হয়েছে, আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনার পর তার স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে। আহত ব্যক্তিকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তি অবহেলা বা শৈথিল্য দেখালে তা অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ছাড়া কোনো হাসপাতাল অবহেলা বা শৈথিল্য দেখালে নিবন্ধন/লাইসেন্স/অনুমতি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধিমতে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একটি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা সেল গঠন করবে। এই সেবা সেলের মনিটরিংয়ের ফলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চিকিৎসাসেবা প্রদানে অবহেলা বা শৈথিল্য চিহ্নিত হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বিচার্য হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা সুবিধা বা সক্ষমতা না থাকলে রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং প্রাথমিক চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্যাবলি লিপিবদ্ধ করে তাত্ক্ষণিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে উপযুক্ত চিকিৎসাসুবিধা সংবলিত হাসপাতালে নিজ দায়িত্বে স্থানান্তর করবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, আহত ব্যক্তির চিকিৎসা প্রদানে সক্ষমতাসম্পন্ন হাাসপাতাল কোনো অবস্থাতেই রোগীর চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত বা স্থানান্তর করতে পারবে না। আহত ব্যক্তির জরুরি শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন পড়লে উপযুক্ত অভিভাবক বা আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে ও সম্মতি ব্যতিরেকেই প্রয়োজনীয় শল্যচিকিৎসা দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে আহত ব্যক্তির জীবননাশের আশঙ্কা থাকলে বা জীবনহানি ঘটলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনোভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।