দেশের খবর: লাইসেন্স না দেখে গাড়ি চালাতে দেওয়া ঠিক হয়নি বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন জাবালে নূর পরিবহনের বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন। রাজধানীর কুর্মিটোলার শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই ছাত্রছাত্রী নিহতের ঘটনায় করা মামলায় শাহাদাত হোসেন আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম গোলাম নবীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, স্বীকারোক্তি শেষে শাহাদাত হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর আগে বুধবার জাবালে নূর পরিবহনের বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ইচ্ছাকৃত চাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মাসুম বিল্লাহর হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স ছিল। কিন্তু বাস চালানোর জন্য ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স ছিল না। মাসুম বিল্লাহ স্বীকারোক্তিতে বলেন, জাবালে নূর বাসের (যার রেজি. নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭) চালক আমি। ২৯ জুলাই জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারে ওঠার পর বেশি ভাড়া পাওয়ার আশায় আগে যাত্রী উঠানোর জন্য জাবালে নূরের আরেক বাসের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিলাম। ফ্লাইওভারের নিচে নামার সময় দেখি সেখানে জাবালে নূরের আরেকটি বাস। তখন ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪ থেকে ১৫ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে তাদের গুরুতর জখম করি। এরপর আমি গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যাই। আমার গাড়ির আঘাতেই রমিজ উদ্দিন কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হয়। আট থেকে দশজন আহত হয়। গত ১ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম এই মামলায় মাসুম বিল্লাহকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। আর ২ আগস্ট মালিক শাহাদাত হোসেনকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় কলেজশিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত ও আট থেকে দশজন আহত হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে র্যাব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাসের তিনজন চালক ও দুজন সহকারী এবং একটি বাসের মালিককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন বাসচালক জোবায়ের ও সোহাগ আলী, সহকারী এনায়েত হোসেন ও রিপন হোসেন এবং জাবালে নূর পরিবহনের বাসমালিক শাহাদাত হোসেন।