দেশের খবর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের মাঝে বিএনপি ভীতি আছে। যেমন একটা প্রাণী আছে, পানি দেখলেই ভয় পায়; ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগও বিএনপির নাম শুনলে জলাতঙ্ক রোগীর মতো ভয় পায়। তারা যা কিছু হয়, সেখানে বিএনপি দেখতে পায়। মনে হয় বিএনপি ভীতিতে প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে পারে না। শুক্রবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, পুলিশের সহায়তায় এবং তাদের সামনে বিএনপি-জামায়ত কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মারপিট করবে, সাংবাদিকদের কোপাবে, আওয়ামী লীগ অফিস আক্রমণ করবে আর তাদের গ্রেফতার করা হবে না- এ কথা বিশ্বাস করবে এ দেশে এমন কোনো পাগলও নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন, এসব আক্রমণ নাকি বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা করেছে। হেলমেট পরা ও মুখোশধারী আক্রমণকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মী ছিল, এটা আহত সব সাংবাদিক এবং ছাত্রছাত্রীরা বলার পরও তিনি তাদের বিচার করার জন্য নাম চান। এমন বাজে রসিকতায় তিনি আনন্দ পেতে পারেন, কিন্তু দেশবাসী লজ্জিত হয়। বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগই পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেই পুলিশ তাদেরই নির্দেশে হেলমেট ও মুখোশধারীদের মানুষ কোপানোর পর নির্বিঘ্নে সরে যেতে দিয়েছে। এর পর হামলায় আহতদের কাছে নাম চাওয়া একটা নোংরা রসিকতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। বলা বাহুল্য, সাংবাদিক ও টিভি চ্যানেলগুলোর ওপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখার পরও এই সত্যগুলো টিভি ক্যামেরার চোখ এড়িয়ে যায়নি এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ পেয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দলের সিদ্ধান্তেই সরকারি দল ও ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় হেলমেট ও মুখোশ পরে অগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি, কিরিচ, রামদা নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর অমানবিক ও বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের মারপিট করেছে। দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন হোস্টেলে ও আবাসস্থলে গিয়ে ছাত্রদের মারপিট করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। এ সবকিছুই ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে এবং তাদের সহযোগিতায়। সড়ক আইন নিয়ে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মানার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সরকার মন্ত্রীসভায় সড়ক পরিবহন আইনের যে সংশোধনী অনুমোদন করেছে তা ইতোমধ্যেই পরিবহন মালিক সমিতি ছাড়া সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, সংশোধিত এই আইনে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিকৃত নিরাপদ সড়ক অর্জিত হবে না। কারণ, এই আইনে সড়ক পরিবহন খাতে মানুষ হত্যা ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর স্পষ্ট দিক নির্দেশনা কিংবা কঠোর শাস্তির বিধান নেই। আন্দোলনে সমর্থনের বিষয়ে ফখরুল বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যে অভূতপূর্ব ঐক্যবদ্ধ এবং সুশৃংখল প্রতিরোধের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতি ও আন্দোলনের ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছি। এটা অপরাধ হলে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যন্ত একই অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার কথা। তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটা যৌক্তিক আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে এবং এই আন্দোলনের প্রতি সারাদেশের মানুষের সমর্থন রয়েছে। আজকে যে পদ্ধতিতে সরকার এটাকে দমন করেছে এটা সার্বজনীনভাবে ধিকৃত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন করে আওয়ামী লীগ আরও গণবিচ্ছিন্ন হয়েছে।