জাতীয়

মা-বোনকে বেঁধে রেখে শিশুকে ধর্ষণ, শিশুর মৃত্যু

By Daily Satkhira

August 16, 2018

দেশের খবর: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ধর্ষনের শিকার হয়ে ১১ বছর বয়সের কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মা-মেয়ে দুজনেই ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে। উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামে মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ কিছুই বলতে পারেনি।

মারা যাওয়া শিশুটির চাচা মোঃ ইউসুফ ঘরামী জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার সময় চারজন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত তাঁর ভাইয়ের ঘরে অতর্কিতে এসে এমন পাশবিকতা চালিয়ে গেছে। ঘটনার সময় বাড়িতে তার ভাইসহ কোনো পুরুষ সদস্য ছিল না। দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার পর তার ভাইয়ের স্ত্রী দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে ডাক-চিৎকার দিলে আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দারা ছুটে আসে। এ সময় ধর্ষিতা শিশুটিকে ঘরটির দোতলায় বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তার কোনো জ্ঞান ছিল না। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। মেয়েটির মা তখন চিৎকার করে সকলকে জানায়, তার দুই মেয়ের আরেকজনকে ওরা বেঁধে রেখেছে!

স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে আমার ভাইয়ের স্ত্রীর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পেরেছি।

সেরাজপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুর্বৃত্তরা সংখ্যায় চারজন ছিল। মুখ বেঁধে এরা বাড়িতে প্রবেশ করে। দুর্বৃত্তদের দ্বারা মা-মেয়ে দুজনেই ধর্ষনের শিকার হয়েছে। উপুর্যপরি ধর্ষনের কারণে হয়তো শিশুটি মারা গেছে।

শিশুটির ফুপু পারভীন আক্তার জানায়, দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকেই ছোট বাচ্চা দুইটার মুখে টেপ লাগিয়ে দেয়। তারপর অত্যাচার করেছে। মেয়েটি ধর্ষনের শিকার হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আরিফুর রহমান ধর্ষনের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, শিশুটি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা গেছে। তবে শরীরে ক্ষতের চিহ্ন দেখা গেছে। শিশুটি কী কারণে মারা গেছে তা ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন না দেখে বলা যাবে না।

সেরাজপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. মামুন হাওলাদার বলেন, আমি হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় দেখেছি। তবে তার শরীরের গোপনাঙ্গ থেকে তখনও রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুস ছালাম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এ অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিতে হবে। সেই সঙ্গে আমরা এ নির্মমতার সুষ্ঠু বিচার চাই।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া শিশুটি ধর্ষনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে কী না তা এখনই বলা যাবে না। আমরা শিশুটির মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে। কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা চিহ্নিত করা যায়নি বলে তিনি জানান।