জাতীয়

গ্রেফতারের পর ধর্ষণ মামলার আসামি ছেড়ে দিলেন ওসি!

By Daily Satkhira

August 19, 2018

দেশের খবর: একটি ধর্ষণ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে থানাহাজতে নেওয়ার ঘণ্টা চারেক পর ছেড়ে দিয়েছেন বগুড়ার ধুনট থানার ওসি খান মো. এরফান। অভিযোগ উঠেছে, ঘুষ নিয়ে তিনি আসামি আল হেলালকে ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি এরফান। তিনি বলেন, ‘আল হেলাল প্রকৃত আসামি কিনা, এ ব্যাপারে কনফিউশন (সন্দেহ) থাকায় তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’

আল হেলাল মথুরাপুর ইউনিনের পীরহাটি গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। সে উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সদস্য। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধুনটের মথুরাপুর বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর রাত ১০টায় তাকে আবার ছেড়েও দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের দাবি, পূর্ব-পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০১৭ সালের ৪ জুন বেলা ১০টার দিকে শেরপুর উপজেলার এক শ্রমিকের বাড়িতে যায় আল হেলাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সময় শ্রমিক দম্পতি বাড়িতে না থাকায় তাদের মেয়েকে মুখ চেপে ধর্ষণ করে হেলাল। পরে মেয়েটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে হেলালকে আটক করে।

ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের দিকে শেরপুর থানার ওসি ছিলেন এরফান। ওই সময় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেননি। পরে ওই বছরের ৭ জুন বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা (নং-১০৯/১৭) করেন তারা। আদালত গত ২৫ জুলাই আসামি আল হেলালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ সূত্রের অভিযোগ, ‘হেলালকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন ওসি এরফান। শুনেছি, এই ওসির বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে।’

ধুনট থানা সূত্রের দাবি, স্থানীয় এমপির সহযোগিতায় প্রায় ছয় মাস আগে শেরপুর থানা থেকে বদলি হয়ে ধুনট থানায় আসেন ওসি এরফান। এ সূত্র আরও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখিয়ে মথুরাপুর বাজার এলাকা থেকে আল হেলালকে গ্রেফতার করেন ওসি এরফান। এরপর রাত ১০টার দিকে তাকে ছেড়ে দেন।

অন্য এক সূত্র জানায়, সম্প্রতি এক তরুণী বাড়ি দখলের অভিযোগ নিয়ে থানায় মামলা করতে আসলে ওসি এরফান তাকে ‘কু-প্রস্তাব’ দেন। পরে ওই তরুণী পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেনকে। এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে মোকবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘এই অভিযোগের তদন্ত চলছে।’ তবে ওসি এরফানের ধর্ষণ মামলার আসামি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।

ধর্ষণ মামলার আসামি আল হেলাল বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে মীমাংসার পর আদালতে আপসনামা জমা দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে, বোধগম্য নয়। ওসি আপস মীমাংসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় আমাকে ছেড়ে দিয়েছেন।’

তবে এ ব্যাপারে ওসি বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানায় আল হেলালের গ্রামের নাম পীরহাটির বদলে শ্যামগাতি লেখা। গ্রামের নাম ভুল থাকায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিই যে আল হেলাল, এটা নিশ্চিত না হতে পেরে তাকে ছেড়ে দেই।’