বিনোদন সংবাদ: টানা চারদিন শুটিং বন্ধ থাকায় পশ্চিমবঙ্গের টিভি চ্যানেলগুলো সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। বিভিন্ন দাবি নিয়ে টালিউডের প্রযোজকদের সঙ্গে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিবাদের জেরে গত শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে শুটিং। ফলে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বাংলা টিভি চ্যানেলগুলোতে চলা জনপ্রিয় মেগা সিরিয়ালগুলি রীতিমতো বিপদে পড়েছে। সোমবার থেকেই বহু টিভি চ্যানেল নতুন এপিসোড না পেয়ে পুরোনো এপিসোড দেখাতে শুরু করেছে। ফলে হতাশ হচ্ছেন দর্শক।
টালিপাড়ার শিল্পী ফোরাম আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, শুটিং বন্ধ রেখেছেন প্রযোজকরা। এই সমস্যার জন্য অভিনেতারা কোনোভাবেই দায়ী নয়। তাদের সাফ বক্তব্য, প্রযোজকরা তাদের দাবিদাওয়া মেনে নিলেই শুটিং শুরু হবে।
শিল্পী ফোরামের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সব অভিনেতাকে বেতন দিতে হবে। বকেয়া বেতন সব পরিশোধ করতে হবে। অভিনেতাদের দিনে সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করাতে হবে। দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করলেই ঘণ্টা পিছু অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে।
শিল্পী ফোরামের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কল টাইমে মেকআপ করে কোনো অভিনেতা শুটিং ফ্লোরে গেলেও সহ-অভিনেতাদের পারিশ্রমিক না মেটানো পর্যন্ত তাঁরা কেউ শুটিং করতে পারবেন না। ফলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার শিল্পী ফোরামের বৈঠকে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, শুটিং বন্ধ রয়েছে। টালিপাড়ায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই অচলাবস্থার জন্য শিল্পীরা দায়ী নন। শুটিং বন্ধ রেখেছেন প্রযোজকরা। শিল্পীদের পাওনা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে প্রযোজকদের ওয়েলফেয়ার সংগঠন ও শিল্পী ফোরামের মধ্যে। শিল্পীরা ধর্মঘটে যাননি, প্রযোজকেরা চাইলেই শুটিং শুরু হবে।
প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিনেতা বা অভিনেত্রীদের দিয়ে বেশি কাজ করালে কখনোই কাজের গুণগত মান বাড়ে না।
এদিকে, শিল্পী ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বকেয়া পাওনা নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল শিল্পী ফোরাম ও প্রযোজকদের সংস্থার মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে শিল্পীদের সমস্ত বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্ত সেই চুক্তি এখন অস্বীকার করছেন প্রযোজকেরা। তাঁরা শিল্পীদের দাবি মানছেন না। যে কারণে এই অচলাবস্থা। প্রযোজকেরা দাবি মেনে কল টাইম দিলেই শিল্পীরা কাজে যোগ দেবেন বলেও জানানো হয়েছে।
জটিল এই পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে শুটিং। ফলে টিভির মেগাসিরিয়াল থেকে শুরু করে ছোট ধারাবাহিকের সবগুলোই এখন নতুন এপিসোডের অভাবে ধুঁকছে। বাধ্য হয়ে সোমবার রাত থেকে কলকাতার বহু টিভি চ্যানেল পুরোনো এপিসোড দেখাচ্ছে। কবে এ অবস্থার উন্নতি হবে বা কবে থেকে শুটিং শুরু হবে, তার কোনো নিশ্চয়তাও আপাতত নেই।