অনলাইন ডেস্ক: এ বছরের ডিসেম্বরে উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাগেরহাটের মোল্লাহাটের একশ’ মেগাওয়াট মধুমতি পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ পাওয়ার প্লান্টের ৬০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৪০ শতাংশ কাজ ডিসেম্বরের আগেই সম্পন্ন হবে। মোল্লাহাট উপজেলার মধুমতি নদীর তীরে গাড়ফা ও গ্রীসনগর মৌজার ১৬ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে মধুমতি পাওয়ার প্ল্যান্ট। নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা জানান, এ পাওয়ার প্ল্যান্ট ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর এ কেন্দ্র উৎপাদনে যাবে। এতে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মধুমতি পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চায়না ন্যাশনাল ম্যাশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড ইক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) কারিগরি সহায়তায় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৬টি ইঞ্জিন ও জেনারেটর স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে কন্টোল রুম, আবাসিক ভবন ও সংযোগ স্থাপনের কাজ। সাত শতাধিক দেশি-বিদেশি শ্রমিক নির্মাণ কাজ করছেন। এ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনসের কাছে অবস্থিত সাব-স্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে।এদিকে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠতে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে গেলে এ অঞ্চলে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। এতে বাগেরহাটের বেকার সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে। বাগেরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় দক্ষিণাঞ্চলের যত উন্নয়ন হচ্ছে, এর মধ্যে অন্যতম একটি এই বিদ্যুৎ প্রকল্প। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দেশের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে। আবার এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। এতে এখানকার মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম ইন্টারপ্রাইজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. জোবায়ের রহমান জানান, বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, নদীর পাশে পাইলিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর বর্তমানে ইন্টারন্যাল রোড, অ্যাপ্রোচ রোড, কানেকটিং রোড, আবাসিক ভবন, আনসার ব্যারাকসহ পাঁচটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ‘জিটেনকোর’র জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. মোহব্বত মোল্লা বলেন, ‘ওয়েল ট্যাঙ্কারের কিছু মালামাল পথে আছে। সেগুলো আসলে আগামী মাসের মধ্যেই ওয়েল ট্যাঙ্কারের কাজ শেষ হবে। এখন জেনারেটরের সঙ্গে ইঞ্জিন ফিটিংয়ের কাজসহ পাঁচটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।’ নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘৬টি জেনারেটর এবং ৬টি ইঞ্জিন ইতোমধ্যে প্ল্যাটফর্মে বসানো হয়েছে। যথাসময়েই এটি উৎপাদনে যাবে।’ চায়না ন্যাশনাল ম্যাশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড ইক্সপোর্ট করপোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার টিনগো বলেন, ‘সব ফাইলিংয়ের কাজ শেষের পথে। যথাসময়ে কাজ হস্তান্তর করা হবে।’ মধুমতি পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সাড়ে ১৪ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন হয়ে সাব-স্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে।’