বিদেশের খবর: গ্রাম পঞ্চায়েত-এর বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় সহিংসতা অব্যাহত। বাড়ছে নিহতের সংখ্যাও। গত ২৫ আগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৯ জনের, আহত প্রায় অর্ধশতাধিক, এর মধ্যে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আছে। বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলির লড়াইয়ে রণক্ষেত্র চেহারা নেয় রাজ্যটির উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আমডাঙা। আজ বুধবার আমডাঙার তারাবেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন, কিন্তু তার আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী সিপিআইএম’এর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। মঙ্গলবার মাঝ রাত পর্যন্ত ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন সিপিআইএম, বাকী দুইজন তৃণমূলের কর্মী বলে জানা গেছে। নিহত সিপিআইএম কর্মীর নাম মোজাফ্ফর পিঁয়াদা (৩৮)। নিহত তৃণমূলীরা হল কুদ্দুস গাইন (৩৪) ও নাসির হালদার (২২)। আহত হয়েছে উভয়পক্ষের প্রায় ১২ জনের মতো। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের বারাসত জেলা হাসপাতাল ও কলকাতায় ভর্তি করানো হয়েছে। সংঘর্ষের খবর শুনে রাতেই আহতদের দেখতে বারাসাত জেলা হাসপাতালে ছুটে আসেন রাজ্যটির খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় তৃণমূল ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে খইরুল হক (৩৫) নামি এক তৃণমূর কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও পাঁচজন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও একাধিক বাড়িতে ভাঙচুড়, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো হয় পুলিশের গাড়িতেও। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার চোপড়ায় আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। জেলার ইটাহারেও তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও। এছাড়াও দক্ষিণ দিনাজপুর, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদীয়া, কোচবিহারসহ কয়েকটি জেলায় বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। গত ২৪ আগস্ট ত্রিস্তরীয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কিত একটি রায় ঘোষণার পরই গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন জেলায় পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর সেই সাথেই কোথাও তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, আবার কোথাও বিরোধী দলগুলির সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একাধিক জেলায় সহিংসতার ঘটনায় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে কঠোর হাতে মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও সহিংসতা থামছে না।