জাতীয়

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে

By daily satkhira

August 30, 2018

দেশের খবর: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে ৩২ বছর করার প্রস্তাব এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বুধবার পাঠানো এই প্রস্তাবে অবশ্য চাকরিতে অবসরের সময়সীমা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ ও অবসরের সময়সীমা ৬৫ বছর করার সুপারিশ করে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ এর আগে গতকাল সকালে বলেন, ‘আমরা সংসদীয় কমিটির প্রস্তাব নিয়ে কাজ করেছি। সেই আলোকে বিভিন্ন বিষয় আমলে নিয়ে নতুন একটা প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে, যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। বিষয়টি অনুমোদিত হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ১৯৯১ সালে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়। সেই সময় অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর। প্রায় ২১ বছর পর অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করে সরকার। সেই থেকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি তোলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সমাবেশও করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাশাপাশি তারাও বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করে। এ অবস্থায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৫৯ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার সুপারিশ করে। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিশেষ বিবেচনায় চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার সুপারিশ করেছি। কেউ ৩৫ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দিলে ক্ষতি তো নেই। আর আমাদের অনেক কারিগরি পদ শূন্য রয়েছে। উপযুক্ত প্রার্থীর অভাবে সেগুলো শূন্য রয়েছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ালে এসব পদও পূরণ হবে।’ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সেশনজট নেই। এ অবস্থায় চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো হলে তা সমালোচনার মুখে পড়বে কি না জানতে চাইলে আশিকুর রহমান আরো বলেন, ‘সেশনজট নেই সত্যি। কিন্তু যারা বেকার তাদের একটা সুযোগ দিলে ক্ষতি নেই। আর আমরা তো অবসরের বয়সও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। অবসরের পর অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্য কোথাও চাকরি করে। সেই হিসাবে অবসরের বয়স বাড়তেই পারে। আমরা বিভিন্ন বিষয় আমলে নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, সংসদীয় কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার সুপারিশ করলেও তা দুই বছর বাড়িয়ে ৩৪ বছর করার প্রস্তাব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এখন কতটুকু বাড়ানো হবে তা প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করবে। সংসদীয় কমিটি অবসরের বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করলেও মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে তা নেই। এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বুধবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়াতে আলোচনা শুরু হলেও বর্তমান সরকারের মেয়াদে তা হচ্ছে না। গতকাল সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় নির্বাচনের আগে (অবসরের বয়স নিয়ে) কোনো পরিবর্তন হবে না। বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা আমার ছিল, প্রস্তাবও দিয়েছিলাম, কিন্তু হয়নি।’ সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনের আগে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন সামনে রেখে যে নির্বাচনী মেনিফেস্টো ঘোষণা করবে, সেখানে প্রায় দেড় কোটি নতুন ভোটারকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা থাকবে। বয়স বাড়ানোর বিষয়টিও সেই পর্যন্ত গিয়ে থামতে পারে।