প্রেস বিজ্ঞপ্তি : আমরা চোর না, ডাকাতও না। আমরা মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে সংসার নির্বাহ করি। অথচ আমাদের প্রত্যেকের ঘাড়ে দশটিরও বেশি মামলা। আমরা আর পালিয়ে থাকতে পারছি না। তার চেয়ে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুক। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই আকুতি প্রকাশ করেছেন শ্যামনগরের রমজাননগর ইউপির মানিকখালির রফিকুল ইসলাম, ভেটখালির মিজানুর রহমান ও টেংরাখালির নেছার আলি। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন তারা বলেন এখানেই শেষ নয়। সাতক্ষীরার কোথাও মোটর সাইকেল চুরি হলেই আমাদের আসামি বানানো হচ্ছে। পুলিশের কম্পিউটারে চোরের লিস্ট আছে। সেই লিস্টে আমাদের নাম উঠে গেছে। মোটর সাইকেল চুরির কোনো ঘটনা কোথাও ঘটলে ওই লিস্ট থেকে নাম নিয়ে আমাদের আসামি বানিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এ পর্যন্ত আটটি মামলার জামিন নিয়েছি আমরা। দুটি মামলার জামিন এখনও নিতে পারিনি টাকার অভাবে। শুনতে পারছি আরও মামলা নাকি দেওয়া হবে। শুধু শ্যামনগর বা সাতক্ষীরায় নয়, আমাদের নামে মামলা হচ্ছে যশোরেও । সেখানে তিনটি মামলা হয়ে আছে। অবশ্য দুটিতে ফাইনাল দিয়েছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সাতক্ষীরার ডিবি পুলিশের একজন এসআই (নাম প্রকাশ করা হলো না) আমাদের ধরেন। বলেন তোরা মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্য। ৫০ হাজার টাকা দে, না হলে মামলা দেবো। তারা বলেন আমরা টাকা দিতে পারিনি, তাই ধরে নিয়ে প্রথম মামলা দিলো। ওই মামলায় জেলে আটক থাকা অবস্থায় একই বছরের ১২ মে তারিখে আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখায় সদর থানা পুলিশ। এ মামলায় জামিন নেওয়ার আগেই পুলিশ ফের আমাদের সদর থানার ৩ মার্চ তারিখের ৩৩ নম্বর মামলায় গ্রেফতার দেখায়। দীর্ঘদিন হাজতবাস করে অবশেষে আমরা জামিনে আসি। অভিযোগ করে তারা বলেন বাড়ি আসার পর যশোরের একটি হত্যা ও মোটর সাইকেল ছিনতাই মামলায় আমাদের আসামি করা হয়। এ রকম দুটি মামলায় পুলিশ আমাদের সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে পরে অবশ্য ফাইনাল দেয়। তারা বলেন এই পাঁচ মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সব অর্থ সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। এর পর থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই গত ২৮ জুলাই শ্যামনগরে মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেট নেতা রেজাউল ইসলাম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বলে জানতে পারি। পরে জানতে পারি আমাদের তিনজনকে ওই মামলায়ও আসামি করা হয়েছে। রেজাউল নাকি আমাদের সাথে বন্দুকযুদ্ধ করে মারা গেছে। এই হত্যার দায় চেপেছে আমাদের ওপর। এরই মধ্যে শ্যামনগরে একটি মোটর সাইকেল চুরির মামলায়ও আসামি করা হয়েছে আমাদের। এরকম গোটা দশেক মামলা ঘাড়ে নিয়ে আমরা এখন ক্লান্ত। অভিযোগ করে তারা আরও বলেন মোটর সাইকেল ছিনতাই কিংবা চুরি বা নাশকতার কোনো ঘটনা ঘটলেই আমরা আসামি হচ্ছি। এভাবে কি বেঁচে থাকা যায় প্রশ্ন রেখে তারা বলেন আমরা তো কোনোদিন কোনো দল করিনা। শ্যামনগরের এমপি এসএম জগলুল হায়দার ও রমজাননগরের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন আমাদের চেনেন। তারা আমাদের পক্ষে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে সুপারিশও করেছেন। তা সত্ত্বেও মামলা হচ্ছে একের পর এক। এ সময় তারা মামলার তালিকা তুলে ধরেন এবং এমপি ও চেয়ারম্যানের সুপারিশও দেখান। তবে শ্যামনগর থানার ওসি মো. ইলিয়াস বলেন তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে মামলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা তার প্রমান মিলবে। ঢালাওভাবে তো মামলা হয় না। আর মামলা থেকে অব্যাহতি হতে পারে কেবলমাত্র তদন্তের মাধ্যমে। রফিকুল, মিজানুর ও নেছার আলির দাবি পুলিশের কমপিউটার লিস্ট থেকে আমাদের নাম মুছে দিন। এ ব্যাপারে আমরা সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করতে চাই। তিনি তদন্ত করে আমাদের সহযোগিতা করলে মামলা থেকে বাঁচতে পারবো, লিস্ট থেকে নামও উঠে যাবে।
৩০.০৮.১৮