দেশের খবর: ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গুদাম এবং শান্তিনগরের এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে আটশ কেজি নেশাদ্রব্য উদ্ধার করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, যা বাংলাদেশে ‘নতুন’। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কাথ শ্রেণিভুক্ত এক ধরনের উদ্ভিদ থেকে তৈরি এই নেশাদ্রব্য আফ্রিকার দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই প্রচলিত। তবে ইদানিং বিভিন্ন দেশে হেরোইন বা ইয়াবার মত মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ভেষজ নেশার পাতা। এ ধরনের বিকল্প নেশাদ্রব্যগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘নিউ সাইকোট্রফিক সাবটেনসেস’ বা এনপিএস নামে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (উত্তর) সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশের নওয়াহিন এন্টারপ্রাইজ নামের এক কোম্পানির ঠিকানায় গত ২৭ অগাস্ট একটি পার্সেল পাঠানো হয়। ওই পার্সেলে মাদক আসছে বলে বাংলাদেশকে আগেই সতর্ক করে দেয় আন্তর্জাতিক একটি মাদকবিরোধী সংস্থা। মো. নাজিম (৪৭) নামের এক ব্যক্তি শুক্রবার দুপুরে ওই পার্সেল নিতে শাহজালালের কার্গো ভিলেজে এলে তাকে আটক করেন মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা। পরে পার্সেল থেকে পাওয়া যায় চারশ কেজি ‘এনপিএস’। খোরশেদ আলম বলেন, নাজিমকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে শান্তিনগরের নওশীন এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেখানে পাওয়া যায় আরও সাড়ে চারশ কেজি একই ধরনের নেশাদ্রব্যের মজুদ। অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, দেখতে চায়ের পাতার মত এই নেশাদ্রব্য আনা হয়েছে গ্রিন টির মত প্যাকেটে করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজিম দাবি করেছেন, এগুলো চা বলেই তিনি জানতেন; মাদক হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি তার জানা ছিল না। ইথিওপিয়ার এক লোকের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল, সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো চালান তিনি আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। সেজন্য প্রতি ২০০ কেজিতে তিনি ৮০০ ডলার করে পাবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেমিকেল এক্সামিনার আবু হাসান বলেন, “বাংলাদেশে এই ধরনের নেশাদ্রব্য নতুন। এক সময় আফ্রিকার দেশগুলোতে ব্যবহৃত হলেও ইদানিং এ নেশা ইউরোপ, আমেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে।” শুকনো ওই নেশার পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে আবার কখনও পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। ওই পাতায় থাকা ক্যাথিনোন ও ক্যাথিন অ্যালকালয়েড থাকে বলে ইয়াবার মতই নেশা হয় বলে আবু হাসান জানান। তিনি বলেন, “এই নেশাদ্রব্য যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে বা দীর্ঘ সময় জেগে থাকতে সাহায্য করে বলে ধারণা করা হয়। তবে এটি সেবনে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।”