অনলাইন ডেস্ক: নতুন এক মোবাইল গেম খিরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে। বলা হচ্ছে আলোচিত আত্মঘাতি গেমস ব্লু হোয়েল, মোমোর পর নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে ‘গ্র্যানি’! বুধবার (৩০ আগস্ট) রাত থেকে এ নিয়ে রীতিমতো হুলস্থূল শুরু হয়েছে ভারতের জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি এলাকায়। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞরা তদন্তের পর প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, গ্র্যানি নামের এই গেমটি মোমো বা ব্লু হোয়েলের মত লিঙ্ক নির্ভর নয়। গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যায়। গেমটি মূলত ভয়ের। এই গেমের বিভিন্ন ধাপে রক্ত, ভূত বিভিন্ন রকম হিংসার ঘটনা রয়েছে। পুলিশের ধারণা, ওই সমস্ত ভয়ের ছবি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এই ছাত্ররা। তাও ওই পড়ুয়াদের মোবাইল খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। পুলিশ অভিভাবকদের পরামর্শ দিচ্ছে— অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের অ্যানড্রয়েড ফোন থেকে দূরে রাখতে। জানা যায়, ময়নাগুড়ির তিন স্কুল পড়ুয়া বুধবার রাতে হঠাৎ করেই অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। কেউ আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে, কেউ পরিবারের লোকজনকে মারধর করে। পরিস্থিতি এমনই ভয়ের হয়ে ওঠে যে, রাতেই খবর দিতে হয় পুলিশকে। শুরু হয়েছে তদন্ত। ময়নাগুড়ির খুকশিয়ার বাসিন্দা সুকুমার রায়, শিবু লোহার এবং রণজিৎ রায়। তিন জনই ছাত্র। সুকুমার বুধবার গভীর রাতে হঠাৎ করে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। পরিবারের ঘুমন্ত সদস্যদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর করতে থাকে। সুকুমারের এই আচরণে ঘাবড়ে গিয়ে আতঙ্কে চিৎকার জুড়ে দেন সুকুমারের বাবা এবং মা। প্রতিবেশীরাও জড়ো হয়ে যান। তারাই সুকুমারকে নিয়ে যান ময়নাগুড়ি থানাতে। তিনজনের মধ্যে এক ছাত্র সুকুমার জানান, বুধবার রাতে ১২টা নাগাদ সে মোবাইল দেখছিল। তখন ফেসবুকের অ্যাপটি হ্যাং হয়ে যায়। সেটি আবার চালু করতে গেলে পাসওয়ার্ড চায়। আর তার পরই ফেসবুকে গ্র্যানি গেমটি আসে। সুকুমারের দাবি, সে ওই গেমটির তিনটি ধাপ খেলেওছে। তার পরই নাকি, অজান্তেই তার মধ্যে একটা অদ্ভুত পরিবর্তন শুরু হয়। সে উন্মাদের মত আচরণ শুরু করে। সুকুমার যখন এ রকম করছে, প্রায় ঠিক তখনই, একই রকম আচরণ করছিল সুকুমারের প্রতিবেশী একাদশ শ্রেণির ছাত্র শিবু লোহার। শিবুও দাবি করেছে, ফেসবুকে সে গেমটি পায়। তার পর সেই গেমটি খেলতে শুরু করে। শিবুর দিদি রুমা বলেন, ‘শিবু হঠাৎ করেই আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। তার পর বলে আত্মহত্যা করবে। ওর চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছিল ভাই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে। মোবাইল ফোনটা হাত থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।’ একই রকম আচরণ করে খুকশিয়ারই আর এক কিশোর রণজিৎ রায়। একই এলাকার তিন কিশোরের এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যান গ্রামের মানুষও। বৃহস্পতিবার গ্রামে তদন্তে যান ময়না গুড়ি থানার আধিকারিকরা। তাঁরা তিন কিশোরের সঙ্গে কথা বলেন। তার পর তাদের মোবাইল নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেন তদন্তের প্রয়োজনে।