দেশের খবর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইভিএম নিয়ে আসার জন্য আমি সবসময় পক্ষেই ছিলাম, এখনো আছি। তবে এটাও ঠিক এটা তাড়াহুড়ো করে চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। কারণ একটা প্র্যাকটিসের ব্যাপার আছে।
তিনি বলেন, ইলেকশনটাকে স্বচ্ছ করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সবই কিন্তু আমরাই করেছি। কারণ মানুষের ভোটের অধিকারটা মানুষের হাতেই থাকুক। কাজ করেছি মানুষের জন্যে, ভোট দিলে দিল না দিলে নেই, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। এটার কারণ আছে সেটা পরে বলবো।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিমসটেক সম্মেলন নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইভিএম ডিজিটাল বাংলাদেশেরই একটা পার্ট। আমরা এখন টাকা পাঠাচ্ছি অনলাইনে, গাড়ি কিনছি অনলাইনে, সবজি কিনছি অনলাইনে। এটা ঠিক যে প্রযুক্তি আমাদের সবসময়ই সুবিধা করে দেয় তা কিন্তু নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ইভিএমের বিরুদ্ধে বিএনপি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। ভোটের রাজনীতিতে কারচুপি করা এটা তো স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিল জিয়াউর রহমান। আজকে বিএনপি যখন ভোটের কারচুপি নিয়ে কথা বলে তখন তাদের তো জন্মলগ্নটা দেখা দরকার। কোন জন্মের মধ্যদিয়ে তারা এসেছিল? ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের কথা সবার মনে আছে। যাদের জন্মটাই কারচুপির মধ্যদিয়ে তারা আবার কারচুপি নিয়ে কথা বলে।
তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে তারা অভিযোগ করবেই, কারণ কারচুপির একটা টেকনিক তাদের জানা আছে। বহু টেকনিক তারা ইলেকশন কারচুপিতে জানে। ইভিএম চালু হলে ব্যালট পেপার একটার বদলে দুটো নিতে পারবে না। সে জন্যে তারা আপত্তি জানাচ্ছে।
স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই ভোটের রাজনীতিতে কারচুপি নিয়ে এসেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ইভিএম চালু হলে বিএনপি ভোট কারচুপি করতে পারবে না বলেই তারা আপত্তি জানাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন মামলা দিয়েছিল। আমার একটা মামলাও কিন্তু তোলে নাই। সবগুলো তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে হবে বলে আমি বলেছিলাম। সেগুলো প্রমাণ করতে পারে নাই।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রকাশিত একটি বইয়ে ভুয়া ছবি প্রকাশ করে যেভাবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তাকে ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “মিয়ানমার যা করেছে অত্যন্ত জঘন্য কাজ করেছে। নিজেরাই নিজেদের সম্মানটা খারাপ করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে নিজেরাই নিজেদের অবস্থান খারাপ করেছে।”
বিমসটেক সম্মেলন নিয়ে রোববার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের ‘আসল সত্য’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গত জুলাই মাসে একটি বই প্রকাশ করে, যেখানে তিনটি ভুয়া ছবি ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
এর মধ্যে ১৯৭১ সালে ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর দুই বাংলাদেশির লাশ উদ্ধারের একটি ছবি ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর বইয়ে ক্যাপশনে বলা হয়েছে- সেটা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের হাতে নিহত স্থানীয় বৌদ্ধদের ছবি।
চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতেই রোববার সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে একজন সাংবাদিক জানতে চান, বিমসটেক সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সম্মেলনে সাধারণত দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো আনা হয় না। তবে রিট্রিট সেশনে মিয়ানমারের প্রেসিন্টের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
“তিনি স্বীকার করেছেন যে আমাদের সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। তারা বলেছেন, তারা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। এটুকু বিষয়ে তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এছাড়া থাইল্যান্ডের প্রধানমন্তীর সঙ্গেও আমি কথা বলেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনও চায়নি প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো সংঘাতপূর্ণ অবস্থা তৈরি হোক।