অনলাইন ডেস্ক: নারী মাত্রই সুন্দরী হওয়ার প্রবল আকাঙ্খা রয়েছে। সুন্দর মুখশ্রী, কোমল ত্বক আর আকর্ষণীয় অবয়বের জন্য মেয়েদের মাঝে রয়েছে তুমুল প্রতিযোগিতা। তবে হাতের কাছে থাকা একটি জিনিস দিয়ে অধরা এই সৌন্দর্য আয়ত্ব করতে পারবেন যে কোনো নারী; আর সেটি হল-মসুর ডাল। এই ডালটিতে উপস্থিত প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কার্বোহাইড্রেড, ডায়াটারি ফাইবার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, সি, ই, কে এবং থিয়েমিন নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের বের করে দিয়ে স্কিনকে সুন্দর করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত মসুর ডাল দিয়ে বানানো নানাবিধ ফেস মাস্ক মুখে লাগাতে শুরু করলে ত্বকের অন্দরে প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়। ফলে ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। তবে এখানেই শেষ নয়। মসুর ডাল আরও নানাভাবে ত্বকের উপকারে লেগে থাকে। যেমন- ত্বককে উজ্জল করে তোলে: অল্প সময়ে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক, এমনটা চান নাকি? তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় মুসুর ডালকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে ৫০ গ্রাম মুসুর ডালকে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে উঠে জলটা ছেঁকে নিয়ে ডালটা বেটে নিতে হবে। তারপর ডালের পেস্টটির সঙ্গে ১ চামচ কাঁচা দুধ এবং পরিমাণ মতো বাদাম তেল মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর পেস্টটি ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফলতে হবে মুখটা। এইভাবে প্রতিদিন ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগবে না। ত্বককে নিমেষে সুন্দর করে তোলে: ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বেসন এবং দইয়ের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তার উপর যদি এই মিশ্রনে অল্প করে মসুর ডাল মিশিয়ে দিতে পারেন, তাহলে তে কথাই নেই! কারণ এই তিনটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে বানানো পেস্টটি এত মাত্রায় পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর হয় যে ত্বক সুন্দর হয়ে উঠতে সময়ই লাগে না। এখন প্রশ্ন হল, কী মাত্রায় এই তিনটি উপাদানকে মেশাতে হবে? এই পেস্টটি বানাতে প্রথমে ১ চা চামচ মসুর ডাল পাউডারের সঙ্গে সম পরিমাণ বেসন এবং দই মেশাতে হবে। সঙ্গে যোগ করতে পারেন অল্প করে হলুদও। এবার সবকটি উপাদান ভাল করে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর মুখ ধুয়ে নিতে হবে। ফেস ওয়াশ হিসেবে কাজে লাগানে যায়: নানা কাজে সারা দিন আমাদের রাস্তায় কাটাতে হয়। ফলে পরিবেশ দূষণের কারণে ত্বকের বারোটা বেজে যেতে সময় লাগে না। এমন পরিস্থিতিতে দিনের শেষে মসুর ডালকে কাজে লাগিয়ে যদি ত্বককে পরিষ্কার করা যায়, তাহলে স্কিন টোনের উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে পরিবেশ দূষণের কারণে ত্বকের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কমে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে এক চামচ মুসুর ডালের পাউডারের সঙ্গে ২ চামচ দুধ, অল্প পরিমাণে হলুদ এবং ৩ ড্রপ নারকেল তেল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রনটি সারা মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে ফলতে হবে মুখটা। ত্বকের অন্দরে আদ্রতার ঘটতি দূর করে: আপনার ত্বক কি বেজায় ড্রাই। সেই সঙ্গে বলি রেখাও দেখা দিতে শুরু করেছে নাকি? তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মসুর ডালের পাউডারের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে নিয়ে নিয়মিত মুখে লাগাতে শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন ধীরে ধীরে বলি রেখা কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ত্বকের ড্রাইনেসও কমে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথমে ১ চা চামচ মসুর ডাল পাউডারের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মেশাতে হবে। এরপর ভাল করে দুটি উপাদান মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রনটি মুখে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পেস্টটি মুখে ঘষার পর হালকা গরম জল দিয়ে মুখটা দুয়ে নিলেই কেল্লাফতে! ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করে: পরিমাণ মতো মসুর ডাল পাউডারের সঙ্গে সম পরিমাণ গাঁদা ফুল মিশিয়ে ভাল করে বেটে নিয়ে এই পেস্টটি বানাতে হবে। তারপর সেটি কম করে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রসঙ্গত, ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ব্রণর প্রকোপ কমাতে এবং ত্বককে নরম তুলতুলে করে তুলতেও এই ফেস মাস্কটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া ফেস হেয়ার পরিষ্কার করা ও মৃত কোষের স্তর সরিয়ে ফেলার কাজেও মসুর ডাল হতে পারে আপনার মোক্ষম অস্ত্র।