ফিচার

সাতক্ষীরা নারকেলতলা-আখড়াখোলা সড়কে ধান চাষ!

By Daily Satkhira

September 03, 2018

বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা-নারিকেলতলা সড়কে এবার বিক্ষুদ্ধ জনতা ধানের চারা রোপন করেছেন। সড়কটি দীর্ঘ ৪/৫ বছরেও সংস্কার না হওয়ার এলাকার কয়েকজন যুবক সম্প্রতি প্রতিবাদ স্বরূপ ধানের চারা রোপন করেন। তারা জানান, দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় এটি এখন বোঝার উপায় নেই যে, এটি সড়ক না ফসলের জমি। ৩ ইউনিয়ানের শহরের সাথে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হলো এই সড়ক। দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে সড়ক দিয়ে সরাসরি যোগযোগ বন্ধ আছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের গাফিলতির কারণে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় সরকারের ভাবমুতিও ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন। স্থানীয় সূত্র জানান, প্রায় প্রতি বছরের বর্ষা মৌসুমে আখড়াখোলা থেকে নারিকেলতলার মধ্যকার আখড়াখোলা ও উত্তর দেবনগর সড়কের উপর পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হবে না। গত বছর প্রায় ২-৩ মাস সড়কটি পানিতে ডুবে থাকার পর বর্তমানে সেখানে ঘাস জন্মেছে। সড়কর পিচের নিচের মাটি উঠে গেছে। ফলে সেখানে ঘাস জন্মানোই স্বাভাবিক। গত প্রায় এক যুগ ধরে সড়কটির বেহাল দশা। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সড়কটি আজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় দেবনগরের বাসিন্দা নব কুমার বলেন, এই অঞ্চলের ৩ ইউনিয়নের প্রায় ১২-১৫ গ্রামের বাসিন্দারা এই ছাল-চামড়াহীন, খানা-খন্দকে ভরা সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করা একেবারেই দায় হয়ে পড়েছে। তবুও ঝুঁকি নিয়ে চলছে ইঞ্জিন চালিত ভ্যান, ব্যাটারী চালিত ভ্যান, রেন্ট-এ মোটর সাইকেল সহ বাইসাইকেল। প্রতিনিয়তই ঘটে দূর্ঘটনা। যেমনঃ ভ্যান খানা-খন্দকের কারণে উল্টে পড়ে, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল পিছলে পড়ে জনগণ আহত হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, সদর উপজেলার আখড়াখোলা থেকে নারিকেলতলা সড়কে গত ১ যুগ আগে পিচ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৪-৫ বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির অবস্থা ভয়াবহ হতে থাকে। গত ২-৩ বছরে যা মারাত্মক ভয়বহ অবস্থার রুপ নিয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সদরের থানাঘাটা মোড় থেকে নারিকেলতলা পর্যন্ত সড়কটির করুণ অবস্থা। সড়কের ছাল-চামড়া নেই বললেই চলে। সড়কের বেশ কিছু দূর সড়কটি নিচু হওয়ার কারণে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় যাতায়াতের সময় যাতায়াতকারীদের পোশাক নোংরা হতে দেখা যায়। অন্যদিকে, থানাঘাটার মোড় থেকে আখড়াখোলা সড়কের বিভিন্ন অংশে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মথুরাপুর বাজার থেকে উত্তর দেবনগর বিল পর্যন্ত সড়কে খানা খন্দকে ভরা। দেবনগর চারা বটতলা সংলগ্ন জামে মসজিদের পাশে এতোটাই গর্ত যে পিচের নিচের মাটি দখা যাচ্ছে। আর এই বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টি হলেই গর্তটি পানিতে ভরে ছোট-খাটো পুকুরে পরিণত হয়। এছাড়াও ছোট-বড় অনেক গর্ত রয়েছে। সবচেযয়ে করুন অবস্থা দেবনগরের বিলের সড়ক। সড়কের উপর পিচ নেই বললেই চলে। এমনকি সড়কর এক পাশ বসে গিগে বড় বড় ড্রেনের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এটাকে ছোট / সরু খালের সাথে তুলনা করছেন। আর বর্ষা মৌসুম এলেই সড়কটি বিলের পানিতে একাকার হয়ে যায়। বিলের নিকটস্থ সড়কের পাশে ২০০৫ সালে স্থাপিত হয় ‘ আখড়াখোলা আইডিয়াল কলেজ’। এমনকি পার্শ্ববর্তী সুনামধণ্য বিদ্যাপীঠ বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আখড়াখোলা বাজার, বালিকা বিদ্যালয় পৌঁছাতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। আর এই স্থানেই ধানের চারা রোপন করেন কতিপয় যুবক। তারা জানান, সড়কের টেন্ডার ৬/৭ মাস আগে হয়েছে। কিন্তু কাজ করছে না। ফলে সরকারের ভাবমুতি ক্ষুন্ন হচ্ছে। স্থানীরা আরো জানান, আমরা ছাত্র সমাজ সাতক্ষীরার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে এই সড়কটি ব্যবহার করি। কিন্তু সড়টি দীর্ঘ দিন যাবত সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। সড়কটি দিয়ে ঝাউডাঙ্গা, বল্লী, লাবসা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ প্রতিনিয়তই যাতায়াত করে। সংস্কার না করায় দিন দিন সড়কটি পরিত্যাক্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার প্রশাসন সবই জানেন। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্জ্ব আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবিকে বার বার অবহিত করা শর্তেও সড়কটির সংস্কারের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা আরো জানান।