দেশের খবর: রাজধানীর সড়কগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় লেগুনার কারণে। সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণও এই লেগুনা। কাজেই রাজধানীতে আর লেগুনা চলবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মাসব্যাপী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘লেগুনার কোনো রুট পারমিট নেই। রাজধানীতে এতদিন যারা লেগুনা চালিয়েছে, তারা অবৈধভাবে তা চালিয়েছে। তাই রাজধানীতে তাদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।’ ‘রাজধানীতে বাস থামানোর জন্য ১২১টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে’ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এগুলোতে বোর্ড লাগানো হচ্ছে। এসব স্থানের বাইরে কেউ বাস থামাতে পারবে না। পাশাপাশি বাস স্টপেজ ছাড়া অন্য কোথাও বাসের দরজা খুলবে না, বন্ধ থাকবে। যাত্রীরাও বাস স্টপেজ ছাড়া অন্য কোথাও নামতে পারবেন না।’ আছাদুজ্জামান মিয়া আরও বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পেট্রল পাম্প মালিকদের সাথে কথা বলেছি। কোনো মোটরসাইকেল চালকের যদি হেলমেট না থাকে তাহলে তারা তেল সরবরাহ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান তিনি। ‘পেট্রলপাম্পগুলোর মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, মোটরসাইকেলে যাদের হেলমেট থাকবে না, তাদের তেল দেওয়া হবে না। মোটরসাইকেলে তিনজন যাত্রী উঠতে পারবেন না। যাত্রীকে অবশ্যই হেলমেট পরতে হবে। ফুটওভার ব্রিজ, জেব্রাক্রসিং ও আন্ডারপাস ছাড়া রাস্তা পার হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘রিকশার শৃঙ্খলা আনার জন্য ঢাকা শহরের নিবন্ধন নেই এমন রিকশা চলতে দেওয়া হবে না। বাসের মধ্যে চালকের মোবাইল নম্বর ও ছবি টাঙিয়ে রাখতে হবে। বাসের চালকদের চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না, বেতনভুক্ত করতে হবে।’ প্রত্যেক চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখার আহ্বান জানান তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত ছয় মাসে চালক ও যানবাহনের বিরুদ্ধে ৬ লাখ ২৬ হাজার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদের আগে যে ১০ দিন ট্রাফিক সপ্তাহ ছিল, ওই সময়ে ৮৮ হাজার ২৯৩ মামলায় ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ ‘ট্রাফিক আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাব বিবেচনা করা হবে না’ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ হবে। আইন না মানায় আইনে পরিণত হয়েছে। এটা এক দিনে তৈরি হয়নি। এটা ভাঙতে সময় লাগবে। তিনি সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘দখল হওয়া ফুটপাত মুক্ত করার’ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজউক ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে বসে ঢাকার বিভিন্ন দখল হওয়া ফুটপাত উদ্ধার করা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে যারা সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।