বিদেশের খবর: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষায় মার্কিন প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা গোপনে কাজ করছেন বলে দাবি করা হয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস এর এক উপ-সম্পাদকীয়তে। বুধবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার লেখা ঐ নিবন্ধে বলা হয়, প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করতে সংবিধানে ২৫তম সংশোধনী আনার বিষয়ে কাজ করছেন তারা। এর তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রশাসনের ওই কর্মকর্তাকে ভীতু এবং নিউইয়র্ক টাইমসের খবরকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। সেইসঙ্গে নিবন্ধের লেখককে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়। ‘আমি প্রতিরোধকারীদের একজন শিরোনামে’ বুধবার নিউইয়র্ক টাইমসে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রচিয়তা নিজেকে ট্রাম্প প্রশাসনেরই একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করে বলেন, ট্রাম্পের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড এবং ভয়াবহ আচরণ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন তারা। নিবন্ধে ট্রাম্পকে নীতিহীন, অতিআবেগী এবং বেপরোয়া আচরণকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়া, ট্রাম্পকে পদচ্যুত করতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী আনার বিষয়েও তারা কাজ করছেন বলে দাবি করা হয়। প্রেসিডেন্টের মন্ত্রিসভার সদস্যরাই তাকে ইমপিচ করতে পারবেন, সম্ভাব্য ২৫তম সংশোধনীতে এমন বিধান যুক্ত করার কথা বলা হয়। নিবন্ধটি প্রকাশ করে নিজেদের গর্বিত বলে দাবি করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। গণমাধ্যমটির দাবি, ওই নিবন্ধের মাধ্যমে পাঠক জানতে পারছে, ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে আসলে কী চলছে। নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন সিনেটর ডিক ডারবিন। তার মতে, গণতন্ত্রের জন্য এসব ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মার্কিন সিনেটর ডিক ডারবিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যে সব তথ্য দেয়া হয়েছে আমার কাছে মনে হয় সেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা আছে। তার মেজাজ হারানো অবস্থায়, আমরা যারা তার আশপাশে থাকি, তার ঘরে থাকি, বিশ্বাস করুন আপনারা তখন সেখানে থাকতে চাইবেন না। যখন তিনি দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যান, সম্ভবত ঈশ্বরই তা থেকে রক্ষা করেন। নিবন্ধ রচিয়তাকে অকৃতজ্ঞ, বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে হোয়াই হাউস। আর খবরটিকে বরাবরের মতোই ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, প্রশাসনের তথাকথিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার অস্তিত্ব আদৌ আছে কী? নাকি নিউইয়র্ক টাইমস আবারো ভুয়া খবর প্রকাশের ফাঁদে পড়লো? ভীতু, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির যদি অস্তিত্ব থেকে থাকে নিউইয়র্ক টাইমসের উচিৎ জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তার পরিচয় প্রকাশ করা। এর আগের দিন ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর রচিত বিখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডের ফিয়ার বইয়ের সারাংশ প্রকাশিত হয় ওয়াশিংটন পোস্টে। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের বরাতে সেখানে বব জানান, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রশাসনিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের হাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে ট্রাম্পের ডেস্ক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সরিয়ে ফেলার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। সবশেষ নিউইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তার নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ায়, বব উডওয়ার্ডের প্রশাসনিক অভ্যুত্থান দাবির সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।