নিজস্ব প্রতিবেদক : নারী নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় চেয়ারম্যান মনিরুলসহ তাঁর দুই সহযোগী চৌকিদার ইসলাম ও জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সাতক্ষীরা সদর থানাহাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর রোববার সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের নির্যাতন ও প্ররোচনায় আত্মহননকারী নারী আফরোজা খাতুনের (১৬) লাশের ময়নাতদন্ত রোববার সকালে সম্পন্ন করা হয়েছে। আফরোজার পরিবারের সদস্যরা জানান, আফরোজা নিজ বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। গত শুক্রবার দুপুরে কাজের ফাঁকে বাড়ির পাশে সোনাবাড়িয়ায় হাসানের দোকানে যান মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে। তাঁরা জানান, এ সময় পলাশ নামের এক যুবক আসে হাসানের কাছে তার পাওনা টাকা নিতে। এক পর্যায়ে পলাশ ও আফরোজাকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয় হাসান ও তার বন্ধু হাফিজ। পরে তারা চিৎকার দিয়ে লোক জড়ো করে। পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে টেলিফোনে জানানো হয়। চেয়ারম্যান পলাশ ও আফরোজাকে ধরে আনতে বলেন। হাসান ও হাফিজ তাদের দুজনকে বেঁধে নিয়ে যায় ইউনিয়ন পরিষদে। পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, এরপর বিচারের নামে মেয়েটিকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাস করেন চেয়ারম্যান মনিরুল। আফরোজা চেয়ারম্যানকে জানায়, সে কারো সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়নি। একপর্যায়ে মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন চেয়ারম্যান মনিরুল। এ জন্য পলাশের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে তাঁকে নির্দোষ বলে ছেড়ে দেন। আর আফরোজাকে নানাভাবে অপমানিত করে মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন চেয়ারম্যান। এরপর, আফরোজা বাড়িতে গেলে তার চাচা আবদুল হাকিম ও আবদুর রাজ্জাক আবারও তাকে মারধর করেন। এই অপমান সইতে না পেরে শনিবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে আফরোজা। এদিকে, এ খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে যেয়ে আফরোজার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। এ ব্যাপারে আফরোজার ভাই ই
ব্রাহীম খলিল শনিবার রাতে ৭জনকে আসামী করে কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামীরা হলেন, চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, হাফিজ, হাসান, চৌকিদার ইসলাম, জয়, হাকিম (আফরোজার চাচা) ও পলাশ। ওসি আরো জানান, শনিবার রাতেই এ মামলার অন্যতম আসামী চেয়ারম্যান মনিরুলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।