দেবহাটা

প্রাথমিক পর্যায়ের নীতি শিক্ষায় অভিভাবক সমাবেশ…… ইউএনও দেবহাটা

By daily satkhira

September 10, 2018

 

কেএম রেজাউল করিম, দেবহাটা: শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না এমন বাক্য ছোট বেলা থেকেই আমরা বুঝে বা না বুঝে মুখস্থ করে এসেছি এবং এগুলো অতিশয় সত্য বাণীও বটে। আর এ মেরুদন্ড যে কারখানায় তৈরি হয় তার নাম প্রাথমিক বিদ্যালয়। একটি শিশু ভবিষ্যতে কতটুকু ন্যায় নীতিবান, আদর্শবান, চরিত্রবান হবে কিংবা দেশ, জাতি, সমাজের প্রতি কতটুকু দায়িত্বশীল হবে এটি অনেকাংশেই নির্ভর করে তাঁর প্রাথমিক জীবনের শিক্ষার উপর। প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব তাই অপরিসীম। সবার জন্য গুনগত মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন বিদ্যালয়ের সাথে সমাজের সম্পর্ক স্থাপন। সমাজে বসবাসকারী বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত, বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী, বিভিন্ন বর্ণ, স্বভাব ও রুচির অধিকারী ব্যক্তিবর্গের বিভিন্ন আশা ও আকাঙ্খা পূরনের উদ্দেশে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি তাদের সকলের চাহিদা অনুযায়ী গড়ে তোলার জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকগণের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া জরুরী। শিক্ষকগণ একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে (প্রতি ৩ মাস পরপর) শিখন-শেখানো কার্যাবলীর পাশাপাশি বিদ্যালয়ের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম অভিভাবকদের সামনে উপস্থাপন করে থাকেন। এতে অভিভাবকগণ সম্মানিতবোধ করেন এবং বিদ্যালয়ের সকল প্রকার কর্মকান্ডে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। সাধারনত প্রতি সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়ে থাকে। এর ফলে অভিভাবকগন তাদের আদরের সন্তানদের পড়ালেখার অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হন এবং তাদের জন্য করনীয় নির্ধারণ করেন। এছাড়া সরকার ঘোষিত যেকোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন করতে বিদ্যালয় অনেক সময় অভিভাবকদের দারস্থ হন এবং অভিভাবক সমাবেশ আহবান করেন। উদাহরণ স্বরুপ- শতভাগ মিড-ডে মিলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে। সরকার সিদ্ধান্ত নিলেন ৩০জুনের মধ্যে বাংলাদেশের সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ মিড-ডে মিল বাস্তবায়ন করতে হবে। শত ভাগ মিড-ডে মিল বাস্তবায়ন অভিভাবকগণের সম্পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভাব নয়। সন্তানদের দুপুরের খাবার প্রস্তুত করে টিফিন পটে করে গুছিয়ে দেওয়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত দূরুহ একটি কাজ। তারপর ও বিদ্যালয় যখন অভিভাবক সমাবেশের ডাক দিলেন, অভিভাবকগণ সমাবেশে হাজির হলেন। শিক্ষকগণ তাদের সন্তানদের উপকারার্থে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত তখন জানালেন। মিড-ডে মিলের উপকারিতা শিক্ষকগণ অভিভাবকদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অভিভবকগণ এই দূরুহ কাজটিকে সহজ করে নিলেন। তাদের আর পাঁচটি কাজের সাথে এই কাজটি ও করে চলেছেন সানন্দে। এটি সম্ভাব হয়েছে কার্যকর অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শত ভাগ উপস্থিতি, শতভাগ স্কুল ড্রেস পরে বিদ্যালয়ে আসা প্রভৃতি কার্যক্রম বাস্তবায়নে অভিভাবক সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই বলা যায়, নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ গুণগত মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের অন্যতম হাতিয়ার।