দেশের খবর: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাসায়নিকসহ যেকোন হামলা হলে চিকিত্সা দিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে দেশের সরকারি ১১৬টি হাসপাতাল। এসব হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিভাগীয় হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জেলা সদর হাসপাতাল। এ ধরনের ১১৬টি হাসপাতালের প্রতিটিতে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একটি করে প্রশিক্ষণ টিম গঠন, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র মজুদ, সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, তাত্ক্ষণিক অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটার এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে জেনারেটর প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আগামী অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে জামায়াত-শিবিরের মাধ্যমে জঙ্গিদের কাছে টেনে হামলার ছক কষছেন থার্ড ফোর্স নামে কিছু রাজনৈতিক নেতা। এই থার্ড ফোর্স দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিদের ওপর ভর করে তারা রাসায়নিকসহ ভয়াবহ সহিংস হামলা করতে পারে। মন্ত্রী-এমপি এবং সরকারি স্থাপনায়ও হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এমন গোয়েন্দা রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক রাখার পাশাপাশি যেকোন ধরনের হামলা হলে আহতদের সুচিকিত্সা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সুচিকিত্সা নিশ্চিত করতে সরকারি হাসপাতালে সক্ষমতা বাড়াতেও চিঠিতে বলা হয়। গত ৩ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে রাসায়নিকসহ যেকোন ধরনের হামলা হলে চিকিত্সা দিতে সরকারি হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই চিঠি পেয়ে মহাপরিচালকের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুত ৫ দফা নির্দেশনা প্রস্তুত করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের স্বাক্ষরে ওই ৫ দফা নির্দেশনা সারাদেশের ১১৬ সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিঠিতে বলা হয়েছে, এই সব হাসপাতালের পরিচালক এবং জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক উপ-পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জনকে জানানো হয়, জননিরাপত্তা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত গোপন প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশে সম্ভাব্য রাসায়নিক জঙ্গি হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিত্সা ব্যবস্থাপনাসমূহের উলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, হামলা হলে আহতদের চিকিত্সা সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছি। অতীতে আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওয়ের সময় যেভাবে সরকারি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছিল, এখন আবার সেভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, যেকোন ধরনের হামলা হলে চিকিত্সা সেবা দিতে আমরা সরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রেখেছি। সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, রোগীদের আমরা সব সময় চিকিত্সা সেবা দিয়ে থাকি। বিএনপির তান্ডবের সময় আমরা সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা সেবা দিয়েছি। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোন ধরনের হামলা হলে আহত জনগণ যাতে চিকিত্সা সেবা পায় সেজন্য সরকারি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। যেকোন ধরনের পরিস্থিতিতে জনগণকে সরকারি হাসপাতালে সেবা পাবে।