দেশের খবর: ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণের হুমকীমূলক অশ্লীল একটি বক্তৃতার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ এবং আশপাশের জেলাগুলোর রাজনৈতিক অঙ্গন এখন আলোড়িত- চলছে সমালোচনা। সম্প্রতি এক সমাবেশে আলোচিত-সমালোচিত ওই বক্তব্য দেন হিরণ। আওয়ামীলীগ নেতা খোন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ নামে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের টাইম লাইনে ভিডিও এবং সমাবেশের বেশ কয়েকটি ছবি সোমবার রাতে আপলোড করার পর থেকে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ারের মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। তার বক্তব্যের সম্পাদিত অংশবিশেষ এখানে তুলে ধরা হলো-
যা আছে বক্তব্যে একাধিক দল পরিবর্তনকারী শহিদুল ইসলাম হিরণ সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া বাজারের এক পথসভায় পদ্মাকর, দোগাছী ও হরিশংকরপুর ইউনিয়নসহ সদরের পূর্বাঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মীদের বিশেষ করে স্থানীয় বিএনপি নেতা ঘোড়ামারা গ্রামের খেলাফত হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে সারেন্ডার না করলে ‘…দন’ দিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব। বক্তৃতায় তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘পশ্চাদ্দেশের চামড়া তুলে’ প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি আরো বলেন, এই কাজে সাথে থাকবে পুলিশ প্রশাসন। হিরণ বলেন, পুলিশ ভাইয়েরা শুনে নিন, পদ্মাকর ও হাটগোপালপুরে মিটিংয়ের পর বিএনপি সাঁটা হবে। আমাদের স্থানীয় নেতারা পুলিশকে যে নির্দেশ দিবে তা পালন করতে হবে। সেই নির্দেশ যদি আপনারা না শোনেন তবে ঝিনাইদহে আপনারা চাকরি করতে পারবেন না। আমি থানা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিষ্কার ভাষায় বলে গেলাম। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে তাই এই এলাকার কোন বিএনপি নেতাকর্মী বাজারে ঘোরাফেরা করতে পারবে না। গোয়ালপাড়া বাজারে যারা বিএনপি করেন, তাদের ঘরে তালা মেরে দেওয়া হবে। তাই এখনো সুযোগ আছে সারেন্ডার করেন, নইলে আপনারা চোখ হারাবেন, ‘পেছনের’ রক্ত বের হবে ও ঠ্যাং ভেঙ্গে দেওয়া হবে। হিরণ বলেন, আপনাদের নেত্রী জেলে। আপনারা যার কথায় বসে আছেন তাকেও এই মাসের মধ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে। অতএব আপনারা ইউনিয়ন নেতাদের কাছে সারেন্ডার করেন। তিনি বলেন, যে সব আওয়ামীলীগ নেতারা বিএনপিকে আশ্রয় দিচ্ছেন আপনারা বিএনপি ও জামায়াতের চর।
তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, আপনাদেরও বিএনপি জামায়াতের মতো (অশ্লীল শব্দগুচ্ছ, প্রকাশ করার মতো নয়) চামড়া তুলে দেওয়া হবে…ঝিনাইদহ সদরের পশ্চিমেও ঘোষণা দিয়েছি। আমরা জামায়াত-বিএনপি মুক্ত করবো। যে সব আওয়ামীলীগের নেতারা একজনের ছবি পোস্টারে দিয়েছেন তাদেরও মধুপুর চৌরাস্তার মোড়ে (…) চামড়া তুলে নেওয়া হবে। আমি হিরণ মাঠে থাকবো। একেকটা ঘর থেকে বের করবো আর (…) চামড়া খুলে নেব। আমি মারবো। কোন পুলিশ যদি বিএনপির পক্ষে সাফাই গায় তবে সেই পুলিশের চাকরি থাকবে না। হিরণের ‘ঝাঁঝাঁলো আর উদ্ভট’ বক্তব্যের ওই ভিডিওটি ৭ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের যা একাধিক ব্যক্তি শেয়ার করেছেন। এ বিষয়ে হিরণের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি, ফোন রিসিভ করেননি তিনি।