মানবিকতা ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর গত দুই মাসে প্রায় ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে যা ঘটছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করতে আমাদের একমত হওয়া উচিত। সোমবার এ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম। প্রতিবেদনটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে ধরা হলো-
নাফ নদী যদি কথা বলতে পারত, তাহলে কোন দুঃখের কথা প্রথমে বলত? বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে আলাদা করা ছোট্ট পানির বয়ে চলার পথ নাফ। পশ্চিম তীরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, পূর্বপাশে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য, যা রাখাইন বলেও পরিচিত। এ রাজ্যে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাস। যারা গত কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্র ও বন্ধুহীন এবং ভুলে যাওয়া জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।
নাফ নদী যদি কথা বলতে পারত এবং তাদের দুর্দশার কথাগুলো মনে রাখতে পারত তাহলে ২৫ বছরের রোহিঙ্গা নারী আরাফার কথা বলত। যিনি নভেম্বরে ৫ সন্তান নিয়ে নাফের পানিতে ভেসেছিলেন। আরাফার ৬টি সন্তান ছিল। নাফ নদীর তীরে বাংলাদেশের অঞ্চলে একটি অস্থায়ী কুঠিরে বসে যখন আরাফা কথা বলছিলেন তাকে ঘিরে ছিল ছেলে ও তার কিশোরী মেয়ে। আরাফা যখন তার দ্বিতীয় ছেলে কপালে কি ঘটেছে তা বর্ণনা করছিলেন তখন তার মেয়েরা মায়ের পেছনে মুখ লুকাতে চেষ্টা করছিল কিংবা বারবার বাইরে যাচ্ছিল আর আসছিল।
আরাফার দ্বিতীয় ছেলের বয়স ছিল ৮ বছর। ২২ নভেম্বরের কোনও এক সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের গ্রাম আক্রমণ করে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে অবৈধ অভিবাসী মনে করা হয় এবং দেশটিতে তাদের কোনও ভোটাধিকার নেই। রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরেই বৌদ্ধদের নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে। সর্বশেষ ২০১২ সালে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এ অঞ্চলে। আরাকানের বৌদ্ধদের সঙ্গে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংঘাতে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ওই সময় অভিযোগ করেছিল, সেনা সদস্যরা সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার সময় তা দমনে কোনও ভূমিকা রাখেনি।
তবে এবারের সেনাবাহিনীর হামলার আগের চেয়ে ভিন্ন ছিল বলে মনে আরাফা। এবার সেনা সদস্যরা রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদে ও শাস্তি দিতে অনেক বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের অস্ত্র ছিল আগুন।
আরাফা জানান, সেনারা তাদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা যখন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ছিল তখন কোনওমতে তিনি ৬ সন্তানকে নিয়ে বের হতে পারেন। এ সময় তারা এক সেনা সদস্যের সামনে পড়ে যান। ওই সেনা ৮ বছরের ছেলেকে কেড়ে নিয়ে তার ভাই ও বোনের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলে এবং অগ্নিকুণ্ডে তাকে নিক্ষেপ করে।
আতঙ্কের মধ্যে আরাফা স্বামীকে হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তার ফিরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। স্বামীকে ফেলে রেখে সন্তানদের নিয়ে কাঁদতে কাঁদে তাকে ছুটতে হয়। বলেন, সন্তানদের তো বাঁচাতে হবে। আমাদের পালাতে (মিয়ানমার ছেড়ে) পালাতে হতো। তারা (সেনাবাহিনী) সবকিছু পুড়িয়ে দেয়।
এরপর দুই দিন আরাফা ও তার সন্তানদের মিয়ানমার অংশে নদীর তীরে বনে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। সব সময় শুয়ে বা নিচু হয়ে থাকতে হয়েছে যাতে করে সেনারা তাদের দেখতে না পায়। এরপর একটি নৌকায় উঠে নাফ নদীতে আসেন।
আরাফা ও তার সন্তান শুধু নয়। গত দুই মাসে প্রায় ২১ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর রোহিঙ্গারা পালাতে থাকেন। শরণার্থীদের বিবরণ, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সংগ্রহীত স্যাটেলাইট ছবি এবং ফাঁস হওয়া ছবি ও ভিডিওতে আরাকানে কয়েক লাখ মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস তাণ্ডবের চিত্র পাওয়া যায়।
সর্বশেষ সংকটের শুরু হয় অক্টোবরের শুরুতে। ওই সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তিনটি চৌকিতে হামলা চালায় ইসলামি জঙ্গিরা। হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। সরকারের দাবি, হামলাকারীরা ছিলো জঙ্গি গোষ্ঠী আকা মুল মুজাহিদিন। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে হামলায় রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-কে দায়ী করা হয়। আরএসও দীর্ঘদিন ধরেই বিলুপ্ত বলে মনে করা হয়। আরএসও-র সক্রিয়তার বিষয়টি শুধু সরকারি ভাষ্যে প্রকাশিত হয়।
এ হামলার জের ধরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ অপারেশনকে সমষ্টিগত শাস্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যাতে পুরো জাতির বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো হচ্ছে। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও আছে। বিচারবহির্ভূতভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যাও করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগের কাজে হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরেক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ১০-১৮ নভেম্বরের মধ্যে ৫টি রোহিঙ্গা গ্রামে ৮ শতাধিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। তার আগে আরেকটি উচ্চ রেজ্যুলেশনের ছবিতে দেখা গেছে, ২২ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনটি গ্রামের ৪ শতাধিক বাড়ির ধ্বংস করা হয়েছে। বাস্তবে ধ্বংস হওয়া বাড়ি ও ভবনের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি।
ছবিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করা অসম্ভব কারণ মিয়ানমার পুরো এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। তবে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত ইয়াংগি লি মনে করেন, পরিস্থিতি যে খারাপের দিকে যাচ্ছে তাতে সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে আমাদের একমত হওয়া উচিত।
টাইম সাময়িকীকে তিনি বলেন, দেশের ভেতরে ও প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে আমি যেসব খবর পাচ্ছি তার সঙ্গে সরকারি ভাষ্যের সামঞ্জস্য নেই। আমরা বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও দেখছি যাতে পরিস্থিতি অনেক খারাপ বলে মনে হচ্ছে। তিনিও স্বীকার করেন ছবি ও ভিডিওগুলোর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরও বলেন, আমরাও ধর্ষণ ও যৌন সহিংতার খবর পাচ্ছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের লাশও উন্মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে।
লি বলেন, এ পর্যন্ত কতজন মানুষ নিহত হয়েছেন সে সংখ্যা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। হয়ত অনেকেই লুকিয়ে আছেন। নভেম্বরের শুরুতে সহিংসতা কবলিত এলাকায় সরকারিভাবে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সফরের বিষয় নিয়েও নিজের অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, এই সফর নিয়ে কারও সন্তুষ্ট হওয়া উচিত নয়। এটা ছিলো একটি নির্দেশিত সফর। কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এরপর তাদের শাস্তি দেওয়ার কথাও শুনেছি আমরা। তাদেরকে খুঁজে বের করা হয়েছে।
৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ ১৪ টি দূতাবাস আরাকানের উত্তরাঞ্চলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর যাতায়াতের পূর্ণ সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। দূতাবাসগুলোর বিবৃতিতে গত দুই মাসে শিশুদের পুষ্টিহীনতা ও মানবিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
মিয়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। স্থানীয় এক রাজনীতিক ও অক্টোবরে সীমান্তে হামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা আং উইনকে বিবিসির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ধর্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি তখন বিবিসির ক্যামেরার দিকে সহজভাবে কথাই বলতে পারেননি। মুখ ভেঙছিয়ে তিনি দাবি করেন, রোহিঙ্গা নারীদের সেনা ধর্ষণ করবে না কারণ তারা খুব নোংরা, নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন করে। তারা আকর্ষণীয় নয়। তাই তাদের প্রতি স্থানীয় বৌদ্ধ কিংবা সেনারা আগ্রহী হবে না।
তাছাড়া, দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা সিনিয়র জেনারেল মিং আং হায়াং রোহিঙ্গাদেরই দায়ী করেছেন। রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যায়িত করে তিনি দাবি করেছেন নাফ নদীর ওপর পাশে বাংলাদেশই তাদের ঠিকানা। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কখনও রোহিঙ্গাদের অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের দূত বলেন, এটা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সেই পুরনো অবস্থান। যাতে তারা দাবি করে, রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।
নাফ নদীর বাংলাদেশি অংশ পরিদর্শন করা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক গবেষক পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা যাদের সঙ্গেই কথা বলেছেন সবাই বলেছে সেনাবাহিনীই অগ্নিসংযোগ করেছে।
রাজনৈতিক প্রভাবের জটিলতায় সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করতে পারছেন না দেশটির নেতা আং সান সু চি। টাইম সাময়িকীতে কাজ করা ফ্রান্সিস ওয়েড জানান, সেনাবাহিনীর সমালোচনা সুচি করতে চান না। কারন এতে করে তিনি ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবেন না। তিনি বলেন, যদি সেনাবাহিনী মনে করে বেসামরিক সরকারের কাছে তারা কর্তৃত্ব হারাচ্ছে তাহলে তারা আবারও ক্ষমতা নিজেদের নিতে পারার চেষ্টা করবে। এ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে শান্তিতে নোবেল জয়ী সুচির নিরবতায় সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
নভেম্বরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৩০ বছরের রোহিঙ্গা ইউনুস বলেন, মিয়ানমারের মুসলিমদের রক্ষায় এখনও পর্যন্ত কিছুই করেননি সুচি। আমরা মনে করেছিলাম কিছু পরিবর্তন হবে। কিন্তু সুচি আর সবার মতোই।
রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সংকট শুধু মিয়ানমারের পক্ষ থেকে নয়। ইউসুফ, আরাফা ও তাদের মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে পালিয়ে আসলেও তাদের পড়তে হয় বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীদের সামনে। সংঘাত শুরুর পর থেকেই মিয়ানমার সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ। অনেক শরণার্থীই নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন।
রোহিঙ্গারা এবারই প্রথম বাংলাদেশে আশ্রয় চাইছে না। গত কয়েক দশক ধরে সহিংসতায় বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নিবন্ধিত রয়েছেন বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশ জানিয়েছে, আর আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র উপ- মহাপরিচালক কর্নেল এম.এম. আনিসুর রহমান বলেন, আমার দেশ আমার বাড়ি। যদি আমার বাড়িতে সব মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করে, তাহলে কী হবে? আমিতো সবাইকে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারি না।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের নীতি এখন পুশব্যাক। কর্নেল আনিসুর রহমান বলেন, অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন। তারা যদি আমাদের কাছে খাবার, পানি ও অপর সহযোগিতা চায় আমরা তা দেব। কিন্তু আমরা তাদের আশ্রয় দিতে পারব না। তিনি জানান, যারা ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাদের খুঁজে বের করে আটকের পর ফেরত পাঠানো হবে।
এক দশকেরও বেশি সময় আগে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী দু দু মিয়া পুরো পরিস্থিতি বুঝাতে গিয়ে বলেন, আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই এটা বিশ্বকে বুঝতে হবে। আমাদের কোনও দেশ নাই। মিয়ানমার আমাদের পালাতে বাধা দেয়, বাংলাদেশ আমাদের ঠেলে তাদের কাছে ফেরত পাঠায়। আমাদের শুধুই আছে নাফ এবং নাফ। এবং এখন পর্যন্ত নাফ নিশ্চুপ।