স্বাস্থ্য কণিকা: রাজধানীতে গত কয়েক দিনে আটক হওয়া নতুন মাদক ‘খাট’ বা ‘এনপিএস’ (নিউ সাইকোট্রফিক সাবস্টেন্সেস) মানবদেহের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে এই ভেষজটি অন্যান্য প্রাণঘাতী মাদকের মতোই ভয়ংকর। এনপিএসকে দেখে অনেকেইে ‘গ্রিন টি’ মনে করে ভুল করতে পারেন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই ভেষজটি সি ক্যাটাগরির মাদক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অনেকেই এটিকে ‘আরবের চা’ বলেন। মাদকসেবীরা এই পাতা চিবিয়ে বা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করে। এই মাদক মূলত সোমলিয়া ও ইথিওপিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশে উৎপন্ন হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায়। এনপিএস মানুষের শারীরিক ও মানসিক দুইভাবেই ক্ষতি করে থাকে। এ কারণে গত বছর পর্যন্ত ১১০টি দেশ এটিকে মাদক হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করেছে। জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধ ইউনিটের প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে মাদক চোরাচালানের আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে এনপিএস পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে দেশে এই মাদকের ভোক্তা আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একসময় ব্রিটেনের শতাধিক ক্যাফেতে এই ভেষজ অবাধে বিক্রি হতো। পরে এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পেরে ২০১৪ সালেই ব্রিটেনসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এর আমদানি ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এর প্রাকৃতিক স্টিমুলেটিং উপাদান মুহূর্তেই সেবনকারীকে চাঙা করে তোলায় তারা এটিকে চা-কফির মতোই মনে করে।
এনপিএসে মানুষের মধ্যে যে প্রভাব পড়ে- ১. মানুষ নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। প্রচুর অর্থহীন কথা বলে। ২. বিভ্রান্ত ও নির্লিপ্ত হয়ে যায় এবং নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করে। ৩. ঘুমের সমস্যা হয়। ৪. তীব্র মানসিক উদ্বেগ ও আগ্রাসনে আক্রান্ত হয়। ৫. বার বার চাবানোর ফলে দাঁত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। ৬. নিয়মিত পানে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং ৭. যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায়। সূত্র : বিবিসি