নিজস্ব প্রতিবেদক : ঃ যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধুকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধুর নাম শাহানারা খাতুন (২০)। তিনি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন উত্তর শার্শা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আসাদুল গাজীর স্ত্রী ও পার্শ্ববতী এনায়েতপুর শানতলা গ্রামের জলিল সরদারের মেয়ে। এনায়েতপুর শানতলা গ্রামের হোসনে আরা খাতুন জানান, শাহানারা খাতুন তাদের সাত ভাই বোনের মধ্যে সকলের ছোট। ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসে তার সঙ্গে উত্তর শার্শা গ্রামের অমেদ গাজীর ছেলে আসাদুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। এ ছাড়া সোনার গহনাসহ পরবর্তীতে জমি বন্দক রাখার জন্য ৪০ হাজার টাকাও আসাদুলকে দেওয়া হয়। শাহানারাকে দেওয়া হয় একটি মোবাইল ফোন। বিয়ের পরপরই বড় ভাই আজাহারুলের সঙ্গে আসাদুল মালয়েশিয়ায় চলে যায়। বিয়ের পর থেকে আসাদুল ও তার পরিবারের সদস্যরা শাহানারাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতো। টাকা দিতে না পারলে তাকে মানসিক ও শারিরিকভাবে নির্যাতন চালানো হতো। বিষয়টি জানালে মোবাইলে আসাদুল তার স্ত্রী শাহানারাকে হুমকি দিতো।একপর্যায়ে শাহানারার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয় তার শ্বাশুড়ি চন্দনা বিবি। হোসনে আরা আরো জানান, প্রতিবেশীদের মুখে খবর পেয়ে শনিবার রাত ১০ টার দিকে তারা শাহানারার শ্বশুর বাড়িতে যান। শ্বাশুড়ি চন্দনা বিবি, বড় ননদের স্বামী চৌরাস্তার নূর হোসেন, চাচা শ্বশুর তাকে নির্যাতনের পর গলায় দড়ি দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে মর্মে এলাকাবাসি তাদেরকে জানায়। একপর্যায়ে গ্রামবাসি দড়ি কেটে মুমুর্ষ শাহানারাকে রাতেই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মাহাবুবর রহমান জানান, শাহানারার থুতনিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।