দেশের খবর: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত কমিটি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে কমিটি আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ সুপারিশ করে।
দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে কমিটির আহ্বায়ক সচিব শফিউল আলম বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে প্রবেশে কোনো কোটা পদ্ধতি না রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি চাকরির ক্রমতালিকার নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি থাকছে না। মুক্তিযোদ্ধা কোটাও না রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ তৈরি করার আগে আমরা সংশ্লিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি। আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, কোটা রাখা বা না রাখা এটা সরকারের পলিসির ব্যাপার। মুক্তিযোদ্ধা কোটা না রাখলে এ-সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে যে রায় হয়েছে, তা লঙ্ঘন হবে না।’
এটি কবে নাগাদ বাস্তবায়িত হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের পর সেটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে এটি কার্যকর।’
এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীসহ সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। পরে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিলও করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি না করায় আবারও মাঠে নামেন আন্দোলনকারীরা। গ্রেপ্তার হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।
এদিকে, আন্দোলনের মুখে সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর গত ৩ জুলাই সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটিই আজ এ সুপারিশ করে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বাধীন এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব।