জাতীয়

দলীয় সরকারের অধীনেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব

By daily satkhira

September 17, 2018

দেশের খবর: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মনে করে দলীয় সরকারের অধীনেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। সেজন্য রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। তবে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে এখানো জনমনে সংশয় রয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গবেষণাপত্র উত্থাপন করেন টিআইবি’র সিনিয়র প্রগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্স এন্ড পলিসি) শাহজাদা এম আকরাম। এসময় টিআইবি’র উপদেষ্টা ও নির্বাহী ব্যবস্থাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, এক সময়ে দেশে তত্ত্বাবধায়ক প্রক্রিয়াটি গ্রহণ হয়েছিলো। তা সাংবিধানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এখন বাস্তবতা মেনে সাংবিধানিকভাবে যেভাবে বৈধ নির্বাচন করা সম্ভব সেভাবে করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র বিরাজ করছে। সেখানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিরল। যদিও আমাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণে কোন কোন দেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করছে।

বিশ্বের অধিকাংশ সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সংস্কৃতিতে যেতে চাই। কিন্তু এটা অবশ্যই মানতে হয়, আস্থাহীনতার যে কথাটি বলা হয়, তাও বাস্তব। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যেটা আশা করতে পারি, নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণকারী দল তাদের সবার মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে। সেই শ্রদ্ধা বোধ থেকেই সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে দায়িত্ব পালন করবে। রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকলে তা সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই সরকারের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার কোনোটাই গ্রহণযোগ্য হয়নি তা বলা যাবে না। কোন কোন স্থানীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। বিতর্কের ঊর্ধ্বে হয়েছে। কী পরিপ্রেক্ষিতে এই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে তা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো সুনির্দ্দিষ্ট ভাবে চেয়েছিল বলেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। তারপরও দেশের অনেক মানুষ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আস্থাহীনতা রয়েছে। যদি পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়, সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাজনৈতিক দলগুলো পালন করে এবং সাধারণ মানুষ যদি সেই ভূমিকা পালন করে পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে তাহলে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে।

টিআইবি’র গবেষণাপত্রের পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার ঘাটতিও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনী অঙ্গীকার ও বাস্তবায়নে অনেক ফারাক রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচারের বিষয়ে সুনির্দ্দিষ্ট অঙ্গীকার ও পরবর্তীতে নির্বাচিত হতে পারলে তা বাস্তবায়নের তথ্য তুলে ধরার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া দূর্নীতি প্রতিরোধ ও শুদ্ধাচারর্চ্চার স্বার্থে দূর্নীতি দমক কমিশনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি কালাকানুন পাস না করার আহ্বান জানানো হয়।