দেশের খবর: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর দাখিল করার বিধান কেন বাতিল করা হবে না, এ মর্মে জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা স্থগিত চেয়ে সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে। আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ সম্পূরক আবেদন দাখিল করেন। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। আদালত অবকাশের পর সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চের কার্যক্রম শুরু হলে আবেদনটি শুনানি করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। জানা যায়, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর মনোনয়নপত্রে দাখিল করার বিধানের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে বলা হয়—(১) স্বতন্ত্র প্রার্থী যে নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক, কেবল সেই এলাকার ভোটারদের সমর্থন ফরম (ক)-তে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতার অনুকূলে সংগ্রহ করতে হবে। (২) স্বতন্ত্র প্রার্থী বা তার মনোনীত প্রতিনিধির কর্তৃক তফসিলের ফরম-ক-তে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য লিপিবদ্ধ করে ভোটারদের স্বাক্ষর কিংবা টিপসই সংগ্রহ করতে হবে। এই বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী তখন জানিয়েছিলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তাদের নিজ এলাকার মোট ভোটারের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর লাগবে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়। প্রার্থীর নিজ আসনে যদি পাঁচ লাখ ভোটার থাকে, তাহলে ভোটারদের মধ্য থেকে পাঁচ হাজার ভোটারের সই নিয়ে মনোনয়নপত্র নির্বাচন অফিসে দাখিল করতে হবে। কিন্তু যারা দলীয়ভাবে নির্বাচন করবে, তাদের ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য হবে না। এই আইনটি একটি বৈষম্যমূলক এবং সাংঘর্ষিক আইন। সংবিধানের ৭, ২০, ২৬, ২৭, ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে আইনটি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছিল। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৫ মে হাইকোর্টেও একটি বেঞ্চ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর মনোনয়নপত্রে দাখিল করার বিধান কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। ২০১৪ সালের ৯ জুনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘এখনো তাঁরা ওই রুলের জবাব দেননি এবং সেই রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তিও হয়নি। আমি একাধিকবার রুল শুনানির জন্য আবেদন করলেও নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীরা বারবার সময় আবেদনের কারণে রুল শুনানি হয়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে ওই রুলটি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য রয়েছে। কোর্ট খুললে রুলটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানাব। এ কারণে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি।’
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ অক্টোবরের পর যেকোনো দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।