দেশের খবর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী আজ সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এদেশে প্রতিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে স্ব স্ব ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনসহ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, কোন গোষ্ঠী বা দল যাতে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, বিভ্রান্তিমূলক বা উস্কানিমূলক পোস্ট, ভিডিও প্রচারকারীকে সনাক্ত করার মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার জন্য সাইবার ক্রাইম মনিটরিং সেল গঠনসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল যাতে গুজব বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে কেউ বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিবাদ বা আন্তঃকোন্দল রয়েছে এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ যাতে কোনরূপ সহিংস ঘটনা না ঘটাতে পারে সে বিষয়ে আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে সকল সম্প্রদায়ের জনসাধারণকে সমানভাবে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটি, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে সভা করে আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ এর কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে দেশ ও বিদেশে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।