অনলাইন ডেস্ক: দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তারই সিনিয়রদের বিরুদ্ধে। দেহরাদূনের একটি বোর্ডিং স্কুলের এ ঘটনা ঘটেছে। একমাস আগে গণধর্ষণের শিকার হয় দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। সম্প্রতি পেটে ব্যথা শুরু হলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রীকে। চিকিৎসকরা জানান, সে এক মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বাভাবিকভাবেই তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। তখনই সে তার বড়বোনদের ধর্ষণের কথা জানায়। বলে, একমাস আগে তাকে ধর্ষণ করে উঁচু ক্লাসের কয়েকজন ছাত্র। বড় বোনের সঙ্গে বোর্ডিংয়েই থাকত ঘটনার শিকার কিশোরী (১৬)। অভিযোগ, গত ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতি উপলক্ষে তাকে বোর্ডিংয়েরই স্টোর রুমে ডেকে নিয়ে যায় চার সিনিয়র ছাত্র। সেখানেই ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ছাত্রী বিষয়টি জানিয়ে সুবিচার চায়। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, স্কুলের কর্মীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, বিষয়টি যাতে পাঁচ কান না হয়, গোপনে ছাত্রীটিকে গর্ভপাত করানোর জন্য নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রীর বড়বোন গোটা বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানানোর পরই মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এ ঘটনা। চার ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন তারা। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ স্কুলের চার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত চার ছাত্রকে। পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিজি অশোক কুমার জানিয়েছেন, ঘটনার কথা তারা জানেন। এক মাস আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্লাস টেনের ওই নির্যাতিতা। উপরের ক্লাসের ছাত্রদের দিকে সে আঙুল তুলেছে। তার কথার উপর ভিত্তি করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি চেপে দিতে চেয়েছিল। তাদের বক্তব্য ছিল এতে স্কুলের ভাবমূর্তি খারাপ হতে পারে। কিন্তু পুলিশ সেই কথায় আমল দেয়নি। তারা নিজেদের মতোই তদন্ত করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অশোক কুমার। নির্যাতিতা তিন চারজনের নাম প্রকাশ করেছে। জানিয়েছে, ওই ছাত্ররাই তাকে ধর্ষণ করেছে। নির্যাতিতা ওই ছাত্রী স্কুলের বোর্ডিংয়ে থাকত। তার সঙ্গে তার দিদিও থাকত বলে জানা গিয়েছে। ধর্ষণের কথা দিদিকে জানানো মাত্রই সে পরিবারকে সেকথা জানায়। পরিবারের লোকেরা স্কুলে পৌঁছায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশও। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট ও শিশু কল্যাণ কমিটির অফিসাররা। নির্যাতিতার বয়ান ইতোমধ্যেই লিপিবদ্ধ করেছে পুলিশ। স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে তারা। রাজ্যের শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন উষা নেগি ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। উষার অভিযোগ, স্কুল প্রশাসক ও তার স্ত্রী গর্ভপাতের জন্য ছাত্রীটিকে ওষুধ মেশানো পানীয় খাইয়েছিলেন।