দেশের খবর: সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান করছে দুদক। তবে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলছেন, সিনহার বিরুদ্ধে এক বছরেও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা না হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয় যে এই অভিযোগ সাজানো। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত প্রধান বিচারপতি ছিলেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সংবিধানারে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপোড়নের মধ্যেই ৪ মাসের ছুটিতে গত বছরের ১৪ অক্টোবর দেশ ছাড়েন তিনি। পরে বিদেশ থেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান এস কে সিনহা। সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থপাচার, নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগগুলো করেছে স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকার কারণে সেসময় আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল অভিযোগগুলো খোলাসা না করলেও তার বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে সেটি বলেছেন। দেশ ছাড়ার প্রায় এক বছর পর নির্বাচনের আগে হঠাৎ আলোচনায় আসেন এসকে সিনহা। ‘ব্রোকেন ড্রিম, রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি’ বইতে দেশত্যাগের কারণ, পদত্যাগ এবং সরকারের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি তুলে ধরে এখন দৃশ্যপটে সিনহা। তার দাবি, সরকারের চাপে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি তার। দুদক আইনজীবী বলছেন, সিনহার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি অভিযোগ ইতোমধ্যে আদালতে প্রমাণ হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়েও অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি। ‘অনুসন্ধান কর্মকর্তা যোগাযোগ করেছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল মহোদয়ের সঙ্গে। উনারা বলেছেন, হ্যা- আমাদের অফিস থেকে গিয়েছে চিঠি। তার মানে এখানে কোনো সন্দেহ নেই। সেটা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বেঞ্চের রায়ে এটা পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এটা নজির বিহীন এবং অবৈধ। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানী পর্যায়ে খতিয়ে দেখছে। অন্য অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখছে, উনার বক্তব্য কতটুকু সত্য।’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বলছে, সিনহার বিরুদ্ধে এক বছরেও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা না হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয় যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সাজানো। ‘দুর্নীতির একটি মামলাও তার বিরুদ্ধে করতে পারে নাই। একটি বাস্তব ভিত্তিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে নাই। সিনহা বাবুকে এই ধরণের অভিযোগ দিয়ে তার ওপরে চাপ প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানো হয়েছে।’ সিনহার বই নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।